চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর এলাকায় টিলা কাটার দায়ে টিকে গ্রুপের এক পরিচালককে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আগামী ৭দিনের মধ্যে জরিমানার এই অর্থ পরিশোধের পাশাপাশি টিলা কেটে ভবন নির্মাণ বন্ধ রাখার নির্দেশও দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
রোববার সকালে শুনানি শেষে এই জরিমানা ও বিধিনিষেধ আরোপের কথা জানান পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নুরী।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের সহকারী পরিচালক রোমানা আকতারে নেতৃত্বে গঠিত একটি টিম গত ১ এপ্রিল পরিদর্শনে গিয়ে ষোলশহর এলাকায় টিকে হাউজের সামার হিলের পাশে একটি টিলা কাটার প্রমাণ পায়। পাশাপাশি টিলাটির কিছু অংশ ড্রেসিং ও কিছু অংশ সমতল করার প্রমাণও মেলে।
একটি তিনতলা ও একটি একতলা বাড়ি নির্মাণের জন্য টিলাটি কাটা হয়েছে বলে জানতে পারে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ জন্য টিলার মালিক টিকে গ্রুপকে শুনানির জন্য ডাকা হয়। রোববার শুনানিতে টিকে গ্রুপের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) আমিনুল হক। তিনি শুনানিতে ছয় হাজার ৪০০ ঘনমিটার পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন।
ষোলশহর মৌজার বিএস ১২২৭১ ও ১২২৮৯ দাগের অংশে টিলাটির মালিক টিকে গ্রুপের পরিচালক খালেদা বেগম। এ জন্য তার নামে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নুরী বলেন, আগামী সাতদিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টিলা কাটা এবং সেখানে যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে টিকে গ্রুপের পরিচালক তারিক আহমেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬ (খ) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি বা আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করতে পারবে না। তবে অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজনে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে পাহাড় বা টিলা কাটা যেতে পারে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
চট্টগ্রামের বাসিন্দা দুই ভাই মোহাম্মদ আবু তৈয়ব ও মোহাম্মদ আবুল কালাম মিলে ১৯৭২ সালে ব্যবসা শুরু করেন। কিছুদিনের মধ্যে তৈয়ব ও কালাম মিলে প্রতিষ্ঠা করেন টিকে গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ।
এডিবল অয়েল অ্যান্ড ফ্যাটস, স্টিল, বোর্ড, পেপার, টেক্সটাইল, প্যাকেজিং অ্যান্ড কইটেইনার, ট্রি প্ল্যানটেশন, শিপ বিল্ডিং, ভোগ্যপণ্য, ট্রেডিং, শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটিজ ব্যবসা রয়েছে টিকে গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের। বর্তমানে টিকে গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৬০টি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।