বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হেফাজতের তাণ্ডবের পর ময়লা সরানো বন্ধ, দুর্ভোগ পৌরবাসীর

  •    
  • ৩ এপ্রিল, ২০২১ ২১:৪১

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর নিয়ে ২৬ ও ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালায় হেফাজতকর্মীরা। পৌরভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর থেকেই পৌরসভায় বন্ধ রয়েছে সব সেবা। ময়লা অপসারণ বন্ধ করে দেয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন শহরবাসী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরভবনে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে বন্ধ রয়েছে সব কার্যক্রম।

২৮ মার্চ ওই ঘটনার পর ময়লা-আবর্জনা অপসারণও বন্ধ করে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে পৌরবাসী। দুর্গন্ধে শহরে টেকাই দায় হয়ে পড়েছে।

পৌর কর্তৃপক্ষের দাবি, পৌর ভবনসহ ময়লা-আবর্জনা অপসারণের সরঞ্জামেরও ব্যাপক ক্ষতি করেন হেফাজতকর্মীরা। এ কারণে ময়লা সরানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরিদর্শনে আসবে বলে পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করছে না।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসা থেকে কয়েক হাজার ছাত্র মিছিল বের করেন। তারা শহরের কেন্দ্রস্থল বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুরের পাশাপাশি শহরের রেলস্টেশন, আনসার ক্যাম্প ও মৎস্য অধিদপ্তরে আগুন দেন।

এর একদিন পর ২৮ মার্চ ডাকা হরতালে আরও ধ্বংসাত্মক ছিলেন হেফাজতকর্মীরা। এদিন শহরের বেশ কয়েকটি সরকারি কার্যালয় ও স্থাপনাসহ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ভবনে। তারপর থেকেই বন্ধ রয়েছে পৌরসভার সব সেবা।

স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তীর পর থেকে গত ৯ দিনে শহরের অলি-গলি ও সড়কগুলোতে জমেছে ময়লার স্তূপ। প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, গৃহস্থালী অবর্জনা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।

শহরের কাজীপাড়া, কান্দিপাড়া, মৌলভীপাড়া, কাউতলী, কুমাড়শীল মোড়, ট্যাংকের পাড়সহ অধিকাংশ এলাকায় ময়লার দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।

পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা জানান, হেফাজত বিক্ষোভকারীদের হামলার সময় ময়লা সরানোর বেলচাও লুট হয়েছে। ঝাড়ু, টুকরি, শাবল, ঘামবুট, ব্লিচিং পাউডারের ড্রাম কোনো কিছুই নেই। ময়লা নেয়ার ট্রাক-ট্রলিও ভাঙচুর করা হয়েছে।

তারা আরও জানান, হামলার সময় ৩০০ পোর্টেবল মোবাইল ডাস্টবিন, ২০০ পোর্টেবল হ্যান্ড ট্রলি এবং ২০টি ভ্যান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ কারণে ময়লা অপসারণ বন্ধ রয়েছে।

শহরের কাউতলী এলাকার ব্যবসায়ী ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘স্টেডিয়াম মার্কেটের পূর্ব পাশ দিয়ে ময়লার স্তূপের কারণে হাঁটাচলা করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। মেথরপট্টির লোকজন অবসর কাটাচ্ছেন। পৌর এলাকার ময়লা অপসারণের গাড়িগুলো অক্ষত আছে। তবে কেন ময়লা অপসারণ করছে না জানা নেই।’

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিলকিস বেগম বলেন, ‘অন্যদের থেকে শুনলাম পৌরসভার কার্যক্রম বন্ধ। তাই ময়লার গাড়ি আসছে না। ঘরে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে ময়লাগুলো ফেলতে হচ্ছে।’

শহরের কাজীপাড়ার দীপু মিয়া বলেন, ‘আমার দোকানের সামনে দীর্ঘদিন ধরে এই ময়লাগুলো ফেলে রাখা হয়েছে। আমাদের এই ধুপাবাড়ির এলাকাটি আবাসিক। এখানে ময়লা জমে থাকলে দুর্গন্ধে মানুষ রাস্তায় বের হতে পারবে না।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক আব্দুন নুর অভিযোগ করেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরিদর্শনে আসবে বলে পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করছে না। আর ভোগান্তিতে পোহাচ্ছে পৌরবাসী।

তিনি বলেন, ‘ময়লা অপসারণ না করে পৌরবাসীকে জিম্মি করছেন তারা। তাদের উচিত জরুরিভিত্তিতে নাগরিক সেবা চালু করা। ওই ঘটনার জন্য পৌরবাসী কেন ভোগান্তিতে থাকবে? তার জন্য পৌরবাসী দায়ী নয়।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেন মেয়র নায়ার কবির। সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পৌরসভার সচিব শামসুদ্দিন জানান, ভাঙচুর ও আগুন দেয়ায় ময়লা অপসারণের অনেক সরঞ্জাম পুড়ে গেছে। এ ছাড়া ছোট ডাস্টবিন ট্রলিগুলো পুড়িয়ে ফেলার কারণে শহর এলাকার ময়লাগুলো অপসারণ করা যাচ্ছে না।

ময়লা ফেলার ট্রাক রয়েছে, এখন ঝাড়ু, টুকরি কেনার অর্থ পৌর কর্তৃপক্ষের আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লোকজন আসবে। তার জন্য ময়লা-আবর্জনা অপসারণ বন্ধ রয়েছে।’

পৌরবাসী কেনো ভোগান্তিতে পোহাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুতই সীমিত পরিসরে শহরের ময়লা-আবর্জনা অপসারণের ব্যবস্থা করব।’

এ বিভাগের আরো খবর