নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যের বাজার এলাকার একটি সেতুর নিচ থেকে অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সরকারি কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
পকেটে থাকা মোবাইল ও সিমকার্ডের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ওই যুবকের পরিচয় বের করে সোনারগাঁ থানা-পুলিশ।
খবর পেয়ে শুক্রবার মরদেহ আনতে যান স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রাণলায়ে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি দেয়ার নামে একটি চক্র ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে ওই যুবক হত্যা করে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোনারগাঁ থানার পুলিশ জানিয়েছে, ‘আমরা ২৫ মার্চ অজ্ঞাতনামা ওই মরদেহ উদ্ধার করি। পরে জানতে পারি ওই যুবকের নাম সাগর ইসলাম। তিনি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হাটখোলা এলাকার নন্দইল গ্রামের আ. রশিদের ছেলে। বিষয়টি পরে পাঁচবিবি থানা-পুলিশকেও অবহিত করা হয়।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত সাগরের বাবা রশিদ বলেন, ‘উচনা গ্রামের আব্দুর রউফের মাধ্যমে উপজেলার বৃদ্ধিগ্রামের আ. আলিম ও হরন্দা গ্রামের গোলাম রব্বানীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ছয় লাখ টাকা দিলে সাগরকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রাণলায়ে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখান আলিম ও রব্বানী। জায়গা-জমি, গরু, ছাগল ও আগের জমানো সব মিলে ৫ লাখ টাকা আলিম ও রব্বানীর হাতে দিই।
‘জয়পুরহাটের রবি নামের এক লোকের মাধ্যমে অফিসারকে টাকাগুলো দিবে বলেও জানান তারা। এরপর আলিম মুঠোফোনে আমার ছেলেকে নিয়ে বাকি ১ লাখ টাকাসহ ২৪ মার্চ ঢাকায় চাকরিতে যোগদান করতে যেতে বলেন। তাদের কথামতো আমি ও আমার ছেলে ঢাকার কালশীতে একটি অফিসে যাই। তারা বলেন, এটা কর্নেল মাসুদের অফিস।
‘পরে বাকি এ লাখ টাকা নিয়ে বলে আপনি বাড়ি চলে যান আপনার ছেলের চাকরি হয়ে গেছে। বাড়ি ফিরে ছেলের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে গেলে বন্ধ পাই। আলিমকে বিষয়টি জানালে সে বলে, আপনার ছেলে ট্রেনিংয়ে আছে, এ জন্য ফোন বন্ধ আছে। গতরাতে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।’
এ ঘটনায় ‘দালাল’ আলিমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
আরেক ‘দালাল’ রউফ অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিয়ে বলেন, ‘আমাকে প্রমাণ করে দেখাক, প্রয়োজনে জেলে যাব।’
অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা ধরেননি।
পাঁচবিবি থানার ওসি পলাশ দেব জানান,এ ঘটনায় সোনাগাঁ থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত দালালদের ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে আমরা আ. রউফ নামের এক দালালকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।’