হেফাজতে ইসলামের হরতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন ও স্থানীয় প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনাকে স্বাধীনতার মূলে আঘাত হিসেবে দেখছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন।
রোববারের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শক করে শুক্রবার গণমাধ্যমকর্মীদেরকে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি এবং সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন প্রেসক্লাব ভাঙচুর, সভাপতিসহ অন্যান্য সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়টি তুলে ধরেন।
গত রোববার হেফাজতে ইসলামের হরতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালায় হরতালকারীরা। তারা স্থানীয় ভূমি অফিস, জেলা পরিষদ কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়ের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালায়। হামলা হয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়সহ মুক্তিযুদ্ধের সব স্মৃতিচিহ্ন, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন ও স্থানীয় প্রেসক্লাবে।
হাতুড়ি দিয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি পেট্রল ঢেলে আগুনও ধরিয়ে দেয় হেফাজত কর্মীরা।
ফরিদা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ খানসহ জাতীয় প্রেসক্লাবের একটি প্রতিনিধি দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবসহ অন্যান্য স্থাপনা পরিদর্শন শেষে সংহতি সভায় বক্তব্য রাখেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি বলেন, ‘সম্প্রতি সহিংসতার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকদের ওপর যে হামলা ও গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, তাদের লক্ষ্য ছিল সাংবাদিকদরা যারা প্রেসক্লাবে হামলা করেছে, সভাপতিসহ অন্যান্য সাংবাদিকদের মারধর করেছে তাদেরকে অবশ্যেই আইনের আওতায় আনতে হবে।’
সব সাংবাদিককে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিভাজনের সুযোগেই ওরা সুযোগ পায়।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ খান বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে হামলা একটি অশনি সংকেত।’
হেফাজত কর্মীরা সেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ম্যুরালেও ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দেয়।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ একটি ভয়াবহ ঘটনা। স্বাধীনতা দিবসে এ ধরণের ঘটনা মানে স্বাধীনতার মূলে আঘাত করা।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী, নির্বাহী সদস্য আইয়ুব ভূঁইয়া, সৈয়দ আবদাল আহমেদও এ সময় বক্তব্য রাখেন।
উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য রেজানুর রহমান, শাহনাজ বেগম পলি, শাহনাজ সিদ্দিক সোমা, সিনিয়র সদস্য জাহাঙ্গীর খান বাবু, সিনিয়র সাংবাদিক জালাল আহমেদ।