বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আমরা আপনার শত্রু নই: প্রধানমন্ত্রীকে বাবুনগরী

  •    
  • ২ এপ্রিল, ২০২১ ১৫:৫১

‘আমরা আপনার শত্রু নই। আপনার শত্রু আপনার ঘাড়ে বসে আছেন। যারা কোনো ধর্ম মানে না, যারা নাস্তিক তারাই ইসলামের শত্রু। তারাই আপনার শত্রু।...বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারী কেউ আলেম নয়। কোনো পীর আউলিয়া তাকে হত্যা করেনি। তাকে হত্যা করেছে তার আশপাশে থাকা লোকজন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলব, আপনি আপনার শত্রুকে চিনে নিন।’

হেফাজতে ইসলামকে ‘শত্রু’ গণ্য না করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেছেন ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনাইদ বাবুনগরী।

শত্রুরা আশেপাশেই আছে বলে তাদেরকে চিনে নিতেও বঙ্গবন্ধু কন্যাকে উদ্দেশ করে বলেছেন তিনি।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার সামনে শুক্রবার জুমার নামাজের পর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

গত রোববার হরতালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হেফাজতের তাণ্ডবের দিন তাদের ওপর আক্রমণের পাল্টা অভিযোগ এনে এই বিক্ষোভ করে সংগঠনটি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ‘আমরা আপনার শত্রু নই। আপনার শত্রু আপনার ঘাড়ে বসে আছেন। যারা কোনো ধর্ম মানে না, যারা নাস্তিক তারাই ইসলামের শত্রু। তারাই আপনার শত্রু।’

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারী কেউ আলেম নয়। কোনো পীর আউলিয়া তাকে হত্যা করেনি। তাকে হত্যা করেছে তার আশপাশে থাকা লোকজন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলব, আপনি আপনার শত্রুকে চিনে নিন।’

চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন হেফাজত নেতারা

কারাগারে যেতে প্রস্তুত

গত শুক্রবার ও রোববারের তাণ্ডবের পর যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলোকে মিথ্যা দাবি করে তিনি তাদের সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নির্দোষ দাবি করেছেন। মামলা প্রত্যাহার না হলে আন্দোলনে নামার হুমকিও দিয়েছেন। বলেছেন, কারাগারে যেতে হলেও তিনি পিছপা হবেন না।

ডাকবাংলো চত্বরের সামনে সমাবেশে বাবুনগরী বলেন, ‘সরকার আমার নামে অনেক মামলা দিয়েছে। আরও মামলা দিতে পারে। আমি জেলে গিয়েছি। তাই আমি জেলখানায় যেতে ভয় পাই না। যে কোনো মুহূর্তে জেলখানায় যেতে আমি প্রস্তুত আছি।’

গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি স্থাপনায় হেফাজত কর্মীদের বেপরোয়া হামলার পর পুলিশের সংঘর্ষে গুলিতে নিহতরা সংগঠনের কর্মী জানিয়ে বাবুনগরী বলেন, ‘যেসব হেফাজতের নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ সরকারকে দিতে হবে। ছাত্রলীগ, পুলিশের হামলায় হেফাজতের যেসব নেতাকর্মী আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’

হেফাজতের তাণ্ডবের পর যে মামলা করা হয়েছে, সেগুলোকে মিথ্যা উল্লেখ করে বাবুনগরী বলেন, ‘সেগুলো প্রত্যাহার করে নিতে হবে। পাশাপাশি যেসব হেফাজত নেতা-কর্মী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে। নয়তো হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।’

নিরাপত্তা জোরদার

হেফাজতের এই বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে জুমার নামাজের পর চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

মহাসড়কের হাটহাজারী বাজার কাচারি রোডের মুখে শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। ফলে সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ঘটনাস্থলে থেকে হাটহাজারী মডেল থানার এসআই আলমগীর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জুমার নামাজের পর হাটহাজারী মাদ্রাসার সামনে ডাকবাংলোতে হেফাজতের বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাই সড়কটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিত স্বাভাবিক হলে সড়ক যান চলাচল চালু করা হবে।’

হেফাজতের বিক্ষোভের কারণে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক বন্ধ করে দেয় পুলিশ

গত শুক্রবারও জুমার নামাজের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতায় হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা থেকে কয়েক হাজার হেফাজত কর্মী মিছিল নিয়ে বের হয়। এ সময় তারা হাটহাজারী থানা, ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও ডাকবাংলোতে হামলা চালায়। পাশাপাশি তারা ভূমি অফিসে আগুনও দেয়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ভূমি অফিসে প্রবেশে বাধা দেয় হেফাজতের কর্মীরা।

এসময় হেফাজত ও পুলিশের সংঘর্ষে গুলিতে চারজন নিহত হন। তাদের মরদেহ পুলিশি পাহারায় নিজ নিজ এলাকায় পৌঁছে দেয় পুলিশ।

পরদিন শনিবার সকালে হেফাজত কর্মীরা মাদ্রাসা গেটে অবস্থান নিয়ে দেয়াল তুলে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে রাখে। রাতে ডাকবাংলোতে ফের আগুন দেয় হেফাজতের কর্মীরা। পাশাপাশি তারা দুইটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয়।

তিনদিন পর তারা দেয়াল তুলে নিলে স্বাভাবিক হয় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে।

রোববার হরতালে হেফাজত কর্মীরা হাটহাজারীর পাশাপাশি ব্যাপক সহিংসতা চালায় নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আক্রমণ ছিল বেপরোয়া। হাজার হাজার মাদ্রাসা ছাত্র সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছে। হামলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সব স্মৃতিচিহ্ন, স্থানীয় প্রেসক্লাবেও।

এসব ঘটনায় সব জেলায় বেশ কিছু মামলা হলেও তাতে হেফাজতের কাউকে আসামি না করা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। অবশ্য পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ বলেছেন, তদন্তে যাদের নাম আসবে, তাদের সবাইকেই অভিযোগপত্রে আসামি করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর