বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাজারে চাপিলার নামে জাটকা ইলিশ

  •    
  • ২ এপ্রিল, ২০২১ ১৫:৫১

চাপিলার নামে জাটকা ইলিশ বিক্রি হলেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না প্রশাসনকে। অপর দিকে, ক্রেতাদের মধ্যেও নেই কোনো অভিযোগ।

গোপালগঞ্জের বিভিন্ন হাটে, বাজারে চাপিলার নামে বিক্রি হচ্ছে জাটকা ইলিশ। প্রতি বছরই এ সময়টা শহরের বাজারসহ বিভিন্ন হাটে-বাজারে উচ্চমূল্যে এসব মাছ বিক্রি হয়ে থাকে।

চাপিলার নামে জাটকা ইলিশ বিক্রি হলেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না প্রশাসনকে। অপর দিকে, ক্রেতাদের মধ্যেও নেই কোনো অভিযোগ।

আর এ সুযোগে এক ধরনের ব্যবসায়ী একদিকে যেমন লাভবান হচ্ছেন, আর অন্যদিকে, ইলিশ মাছ বড় হওয়ার আগেই তা ধরা পড়ে ইলিশের উৎপাদন কমে যাচ্ছে।

গোপালগঞ্জ শহরের বড় বাজার ও বটতলা বাজারে শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, এসব মাছ বিক্রি করতে। অনেকেই জেনে আবার কেউ কেউ না জেনেই চাপিলার নামে এসব ইলিশ মাছের বাচ্চা কিনে নিচ্ছেন।

গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদী থেকে এসব জাটকা শিকার করে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারিভাবে জাটকা ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে চাপিলা মাছের নামে বিক্রি হচ্ছে এসব।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এসব মাছ মধুমতি নদীসহ গোপালগঞ্জের বিভিন্ন নদী থেকে শিকার করা। যদিও গোপালগঞ্জ মৎস্য বিভাগ বলছে, অধিকাংশ জাটকা ইলিশ আসে বরিশাল অঞ্চল থেকে।

নদীতে সাড়ে তিন ইঞ্চির কম ফাঁসের জাল ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। জেলেরা ছোট ফাঁসের কারেন্ট জাল ও নেটের জাল ব্যবহার করে প্রতিদিন জাটকা ইলিশ শিকার করছেন।

গোপালগঞ্জ জেলা শহরের বড় বাজার, বটতলা বাজার, পাঁচুড়িয়া বাজার, ঘোনাপাড়া বাজার, টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী বাজার, বাঁশবাড়িয়া বাজার, কাশিয়ানীর উপজেলা সদর, গোপালপুর ও ভাটিয়াপাড়া বাজার, কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারসহ অন্তত ৩০টি হাটবাজারে চাপিলা মাছের নামে এসব জাটকা ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রতি কেজি জাটকা সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গোপালগঞ্জের মধুমতি নদী, মাদারীপুর বিলরুট চ্যানেল, কোটালীপাড়ার সন্ধ্যা নদী এবং কাশিয়ানীর মধুমতি নদীর মোহনা (যা টিঠা নামে পরিচিত) থেকে কারেন্ট জাল ও নেট জাল দিয়ে জাটকা মাছ শিকার করে থাকেন জেলেরা।

জেলার বড় বাজারের মাছবিক্রেতা হাসান শেখ জাটকা বিক্রির কথা স্বীকার করে জানান, এগুলো বরিশাল থেকে প্রতিদিন সকালে মোটরসাইকেলে করে এক ধরনের বিক্রেতা গোপালগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছে দেন। আর এখানের বিক্রেতারা কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা লাভ করেন।

এগুলো বিক্রি করা নিষেধ এবং আইনগত অপরাধ সেটা জানেন কি না বললে সে জানায়, সবাই বিক্রি করে তাই সেও বিক্রি করে। আর যারা কিনছেন তারা জাটকা জেনেই কিনছেন।

তার পাশেই বসা আরেক মাছবিক্রেতা রবিউল মিয়া। তিনিও কেন এই মাছ ‍বিক্রি করছেন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, প্রতিদিন এ বাজারে ২৫ থেকে ৩০ মন ইলিশের বাচ্চা আসে। অন্যায় জেনেও সে একটু বেশি লাভের আসায় ইলিশের বাচ্চা চাপিলা বলে বিক্রি করেন।

ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সবাই করে তাই তিনিও করেন। বাজারে এই মাছ না আসলে তিনিও আর এগুলো বিক্রি করে লোক ঠকাতে চান না।

জেলা শহরের নবীনবাগ এলাকার বাসিন্দা আকবর হোসেন জানান, না জেনেই ইলিশের বাচ্চা চাপিলা মাছ ভেবে কিনছেন।

এ বিষয়ে জেলা বাজার কর্মকর্তা আরিফ হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, তিনি বিক্রেতাদের এই মাছ বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। আগামীকাল শনিবার থেকে তারা মাঠে নামবেন বলেও তিনি জানান।

জাটকা বিক্রি ও শিকারের কথা স্বীকার করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈরাগী বলেন, ‘গোপালগঞ্জের হাট-বাজারে জাটকা পাওয়া যাচ্ছে শুনেছি। এসব জাটকা স্থানীয় নদ-নদীতে বেশি নেই। এরই মধ্যে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্ব-স্ব উপজেলার হাটবজারে ও নদ-নদীতে অভিযান চালানো হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর