সাতক্ষীরার শ্যামনগরে খোলপেটুয়া নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপকূল রক্ষা বাঁধ ভেঙে পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর পোল্ডারের পশ্চিম দুর্গাবাটি এলাকার সাইক্লোন সেন্টার সংলগ্ন এলাকায় বুধবার রাত বারোটার দিকে প্রায় দুইশ ফুট উঁচু বাঁধ ভেঙে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
প্লাবিত গ্রামগুলো হলো ভামিয়া, পোড়াকাটলা, আড়পাঙ্গাশিয়া ও মাদিয়া।
এতে সাত হাজার বিঘা চিংড়ি ঘেরসহ কয়েকশ মিষ্টি পানির পুকুর তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ছয় হাজার মানুষ। তিন শতাধিক বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকেছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার খোলপেটুয়া নদীর দয়ারঘাট এলাকায় চারটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে আশাশুনি উপজেলার জেলেখালি, দয়ারঘাটসহ চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক বছর ধরে দুর্গাবাটিসহ আশপাশের এলাকার বাঁধ ভাঙতে থাকার পরও কয়েক মাস ধরে নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এতে একের পর এক বাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। দ্রুত বাঁধ মেরামত করা না হলে সামনের বড় জোয়ারে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোও তলিয়ে যাবে।
দূর্গাবাটি গ্রামের নিরঞ্জন মণ্ডল নিউজবাংলাকে জানান, বুধবার রাতে জোয়ারের পানিতে শতাধিক চিংড়ি ঘের ভেসে গেলেও বৃহস্পতিবার দুপুরের জোয়ারে ছোট বড় মিলিয়ে হাজারের বেশি ঘের আর মিষ্টি পানির পুকুর তলিয়ে গেছে।
পোড়াকাটলা গ্রামের নীলকান্ত রপ্তান জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের জোয়ারের পানি ভাঙন কবলিত অংশ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করায় পুরো এলাকা নদীর সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ভাঙন কবলিত অংশের পাশে নতুন করে বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।
তাদের অভিযোগ, বাইরের অংশের চর দেবে যাওয়ায় সেখানে বাঁধ দাড়াচ্ছে না। বাঁধ সংস্কার করে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করার দাবি জানান তারা।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সদস্য ও মাদিয়া গ্রামের ডালিম কুমার ঘরামী বলেন, ‘বুলবুল ও আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি এখনও আমরা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এর মধ্যে বুধবারের ভাঙন আমাদের সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে। লবণ পানিতে সব তলিয়ে যাওয়ায় ছয় হাজার পরিবার তীব্র খাবার পানির সংকটে পড়েছে।’
স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দারসহ পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছে।
সাতক্ষীরা পাউবোর বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে রিং বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে। নদীর তলদেশে স্কাউরিঙের মাত্রা বেশি থাকায় এখানকার বাঁধ বার বার ভাঙছে।