বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পদ্মার পানি বাড়লেও চালু হয়নি জিকে পাম্প

  •    
  • ১ এপ্রিল, ২০২১ ১৯:৫৭

প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘পানি যেহেতু উঠছে শুক্রবার সকালে পাম্প দিয়ে অল্প করে হলেও পানি ছাড়তে পারব। তবে রাতে কতটা পানি বাড়ে তার ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে।’

পদ্মা নদীতে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় চালু হয়নি দেশের বড় সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে)।

পাম্প হাউজের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘পদ্মায় পানি কিছুটা বেড়েছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ৪ দশমিক ৪২ মিটার আরএল (রিডিউসড লেভেল) রেকর্ড করা হয়েছে। পানি ৪ দশমিক ৫ মিটার আরএল পর্যন্ত না উঠলে পাম্প চালানো ঠিক হবে না।’

এই প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদী থেকে পানি এনে চার জেলার কৃষকদের সরবরাহ করা হয়। কিন্তু পদ্মায় পানি একেবারে কমে যাওয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে পাম্প বন্ধ রাখা হয়েছে।

প্রকৌশলী মিজানুর রহমান আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘পানি যেহেতু উঠছে শুক্রবার সকালে পাম্প দিয়ে অল্প করে হলেও পানি ছাড়তে পারব। তবে রাতে কতটা পানি বাড়ে তার ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে।’

ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ১ এপ্রিল থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি পাচ্ছে। টানা ১০ দিন এভাবে পানি পাবে।

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি প্রবাহ

১৯৯৬ সালে সই হওয়া গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ ১১ থেকে ২০ মার্চ, ১ থেকে ১০ এপ্রিল এবং ২১ থেকে ৩০ এপ্রিল গ্যারান্টিযুক্ত ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি পাবে। বাকি সময়ে ভারত পাবে গ্যারান্টিযুক্ত ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি। সে অনুযায়ী, গত ১০ দিন ভারত পানি পেয়েছে।

জিকে সেচ প্রকল্পের পাম্প দুটি গত ১৫ ও ১৭ জানুয়ারি চালু করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় বোরো মৌসুমে এবার কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলায় ১৯৪ কিলোমিটার প্রধান খালের মাধ্যমে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।

ভেড়ামারায় অবস্থিত এই পাম্প হাইজের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, পাম্প দুটি একসঙ্গে সেকেন্ডে ১ হাজার ২০০ কিউসেক পানি সরবরাহ করতে সক্ষম। চালুর পর থেকে ১০ মাস এগুলো নিরবিচ্ছিন্নভাবে চালানোর কথা ছিল।

কিন্তু পদ্মায় পানির লেভেল কমে আসায় ২৬ মার্চ সন্ধ্যার পর থেকে পাম্প দুটির সরবরাহ শূন্যে নেমে আসে। ওই সপ্তাহে পদ্মায় পানি পাওয়া গেছে ৪ দশমিক ১ থেকে ৪ দশমিক ১৮ মিটার আরএল পর্যন্ত।

‘৪ দশমিক ৫ মিটার আরএল এর নিচে নামলেই পাম্প মেশিনের কয়েল ও বিয়ারিং-এর তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে, শব্দ হচ্ছে ও ঝাঁকুনি দিচ্ছে। এ কারণেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পাম্প দুটি বন্ধ করতে বাধ্য হই’, বলেন প্রকৌশলী মিজানুর।

সেচ প্রকল্পের পানি না পেয়ে তোলা হচ্ছে ভূগর্ভ থেকে

এদিকে পাম্প বন্ধ রাখায় চরম বেকায়দায় পড়েছেন চার জেলার কৃষক। বাধ্য হয়ে অনেকেই শ্যালো পাম্প দিয়ে পানি তুলে সেচ দিচ্ছেন। যেসব এলাকায় জিকে প্রকল্পের পানির সরবরাহ আছে তারা এই পানির ওপর ভরসা করেই বোরো ধান, পেঁয়াজ ও ভূট্টা চাষ করেন। এখন হঠাৎ করে পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা চিন্তায় পড়েছেন।

কুষ্টিয়া সদরের সোনাইডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ফরহাদ বিন মোহাম্মদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ধানের অঙ্কুর বের হবে এখন। এই সময়ই বেশি পানির দরকার। সেচের পানির আশায় মাঠে মেশিনের ব্যবস্থা কম। যখন পানির দরকার, তখনই পানি থাকে না।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস জানান, কুষ্টিয়া জেলাতে এবার ৩৫ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে জিকে সেচ প্রকল্পের কাভারেজের মধ্যে রয়েছে সাড়ে ছয় হাজার।

তিনি বলেন, ‘ধানে এখন থোড় আসার সময়। নিয়মিত পানি দেয়া দরকার। দ্রুত পাম্প চালু করা না গেলে কৃষকের ফলন কমে যাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর