সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একটি বাড়ি থেকে দুই শিশু ও তাদের মায়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বজনরা বলছেন, শ্লীলতাহানির বিচার না পেয়ে অভিমানে সন্তানদের হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন মা।
পুলিশ বলছে, মা-সন্তানদের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবীর জানান, জরাজীর্ণ ওই বাড়ির একটি কক্ষে ছিল মাহফুজা খাতুন ও তার ৯ বছরের ছেলে মাহফুজের মরদেহ। অন্য একটি কক্ষে ছিল ৫ বছরের মেয়ে মোহনার লাশ।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় বাড়িটি ঘিরে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মা ও সন্তানদের মৃত্যুর খবর শুনে ছুটে এসেছেন প্রতিবেশী ও উৎসুক জনতা। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। তাদের কাছ থেকে জানা যায়, নিহত মাহফুজার স্বামীর নাম শিমুল হোসেন। তিনি বাগেরহাটে ট্রাক্টর চালান।
ঘরের উঠানে কান্নাকাটি করছিলেন এক বৃদ্ধ। প্রতিবেশীরা জানান, তিনি শিমুলের বাবা আব্দার আলী সরদার। নিউজবাংলাকে আব্দার আলী বলেন, ‘কয়দিন আগে আমার নাতির গোপনাঙ্গে হাত দেয় প্রতিবেশি এক কিশোর। এর বিচার চেয়ে নুরুল ইসলাম চেয়ারম্যানের কাছে গেছি। মহিলা মেম্বার শাহিদা খাতুন তাকেও জানাইছি। কিন্তু তারা সামনে নির্বাচন, এ জন্যই বিচার করেনি।’
‘পরে স্থানীয় মেম্বার সাথিজুল ইসলামকে জানাই। সাথিজুল ওই ছেলের বাসায় গিয়ে গালিগালাজ করে। কিন্তু আজ সকাল বেলা এই ঘটনা ঘটল।’
সাথিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার মাহফুজা খাতুন তাকে বিষয়টি জানায়। বলেন, আমরা গরিব মানুষ বিচার পাব না? এর পর আমি অভিযুক্তদের বাড়িতে যাই। তাদের সতর্ক করে আসি। এর পর মাহফুজার বাড়িতে আসি। কিন্তু কাউকে না পেয়ে চলে যাই।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ওই বাড়িতে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান করেন। আলামত সংগ্রহ করার পর একে একে বের করে আনা হয় তিনজনের লাশ। পরে মরদেহগুলো পাঠানো হয় সদর হাসপাতাল মর্গে।
নিহত মাহফুজার ঘরের সবচেয়ে কাছের বাড়িটি তার চাচা শ্বশুর ইয়াকুব আলী সরদারের। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি সকালে ওই বাড়িতে কাউকে আসতে দেখিনি। পরে দোকানে চলে যাই। ১১টার দিকে শুনতে পাই বউমা ও বাচ্চা দুইটা আত্মহত্যা করছে। এর পর আমি ছুইটা আসি।’
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি খুবই হৃদয়বিদারক। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখন কিছুই বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।