‘হেফাজতের বিক্ষোভকারীরা সমাজে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। শুধু তাই নয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে বিষয়টিকে ইন্ধন দিচ্ছেন বলে আমাদের ধারণা।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, ‘হেফাজতের নামে যারা ধর্ম ব্যবসা করছে শুধু তারা নয়, এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জড়িত।
‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা আসবেন। মাননীয় সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারসহ অন্যান্য নেতা-কর্মী ও সাংবাদিকদের কাছ থেকে যা শুনেছি এতে মনে হচ্ছে এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত।’
ঢাকায় ফিরে তিনি বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাবেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয় বলেও জানান হানিফ। সংবাদ সম্মেলন শেষে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলো ঘুরে দেখেন।
গত শুক্রবার শহরের কান্দিপাড়া এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসা থেকে কয়েক হাজার ছাত্রের মিছিল বের হয়। তারা শহরের কেন্দ্রস্থল বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে আগুন দেয়। এরপর তারা আগুন দেয় শহরের রেলস্টেশন, আনসার ক্যাম্প, মৎস্য অধিদপ্তরে। হামলা হয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়েও। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে একজন নিহত হন।
শনিবারও মহাসড়ক অবরোধ করেন মাদ্রাসাছাত্ররা। তখন পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হলে প্রাণ হারান পাঁচজন।
রোববারের হরতালে হামলা ছিল আরও ব্যাপক। বঙ্গবন্ধুর দুটি ম্যুরাল ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সবগুলো স্থাপনায় ভাঙচুরের পাশাপাশি ধরিয়ে দেয়া হয় আগুন।
হামলা চলে পৌরসভা কার্যালয়, সদর উপজেলার ভূমি কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, গণগ্রন্থাগার, সঙ্গীতজ্ঞ আলাউদ্দিন খাঁর স্মৃতিবিজড়িত সুর সম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন ও মিলনায়তন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকারের অফিস, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি এবং সরাইলের খাটিহাতা হাইওয়ে থানায়।
হেফাজতের তাণ্ডব চলাকালে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফেসবুক লাইভে এসে তার সমর্থকদের আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান।