ভোলা সদর হাসপাতালে ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে এক নারীর মৃত সন্তান বের করতে গিয়ে নবজাতকের মাথা ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে একজন নার্স ও একজন আয়ার বিরুদ্ধে।
শুধু তা-ই নয়, তাদের বিরুদ্ধে সন্তান বের না করেই ওই অবস্থায় প্রসূতিকে অপারেশন থিয়েটারে রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
শনিবার দিবাগত রাতে ভোলা সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চরকলি গ্রামের বাসিন্দা মো. জুয়েল শনিবার বিকেলে তার ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে একটি ক্লিনিকে যান। সেখানে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফুর রহমান পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানান, প্রসূতির গর্ভের বাচ্চা মারা গেছে।
এরপর ওই চিকিৎসকের পরামর্শে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা।
মো. জুয়েল রোববার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের একজন নার্স ও একজন আয়া মিলে তার স্ত্রীর পেট থেকে বাচ্চা বের করতে গিয়ে বাচ্চার মাথা ছিড়ে ফেলেন এবং দেহের অংশ পেটে রয়ে যায়।
এ সময় তার স্ত্রী যন্ত্রণায় চিৎকার করলে তারা তাকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে তারা তাকে ওই অবস্থায় রেখে সটকে পড়েন। পরে অন্য নার্সরা এসে রোগীকে বেডে পাঠান।
সর্বশেষ রোববার দুপুরে হাসপাতালে ডা. সাইফুর রহমান অস্ত্রোপচার করে বাচ্চার বাকি অংশ বের করেন। বর্তমানে তার স্ত্রী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স জেবুননেছা জানান, স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টাকালে নবজাতকের মাথা ছিড়ে যায়। এতে নার্স বা আয়ার কোনো দোষ ছিল না। রোগীকে মারধরের কথা তিনি অস্বীকার করেন।
ভোলা সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ জানান, শনিবার রাতে পেটের ভিতরে মৃত বাচ্চা নিয়ে হাসপাতালে একজন রোগী ভর্তি হয়। এ সময় তার পেট ব্যথা করছিল হাসপাতালের নার্সরা তার নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করেন। ডেলিভারি শেষ করার আগে রোগীর জটিলতা দেখা দেয়। পরে সকালে কনসালটেন্ট এসে রোগীর চিকিৎসা করেন। এই ঘটনায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।