দোলপূর্ণিমায় নেত্রকোণায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দোলযাত্রা উৎসব উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে জেলার সদর উপজেলার হাতকুন্ডলী গ্রামে কামাক্ষা মন্দির প্রাঙ্গণে বসেছে মেলা।
দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির নিয়ে রাধা ও অন্য গোপীদের সঙ্গে রং খেলেছিলেন। এই দিনে রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহে আবির দিয়ে উৎসবের শুরু হয়। ভক্তরাও দিনটিতে পরস্পর আবির দিয়ে রং খেলেন।
রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে হাতকুন্ডলী কামাক্ষা মন্দিরে ধর্মীয় বিধিমতে পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে দোল উৎসবের শুরু হয় ।
মন্দিরের পুরোহিত বিমল দেবর্ষী বলেন, পূজা শেষে শত শত ভক্ত মন্দিরে কামাক্ষা বিগ্রহে আবির দিয়ে এবং মোম, ধূপ, আগরবাতি প্রজ্বালন করে তাদের ভক্তি নিবেদন করেন।
নেত্রকোণা শহরের নাগড়া এলাকার বাসিন্দা শিক্ষিকা গৌরী সাহা আসেন দোল উৎসবে। তিনি বলেন, আশপাশের প্রতিবেশীসহ আমরা সাতজন এসেছি উৎসবে। উপবাস থেকে এসে কামাক্ষা মায়ের পূজা দিয়েছি। আমরা নিজেরা একে অপরকে আবির দিয়েছি। আনন্দ করেছি। এখন মেলায় ঘুরছি। কিছু কিনব।
গৌরী সাহার সঙ্গে আসেন সবিতা রায়। তিনি বলেন, মেলা থেকে সংসারের দরকারি বেতের ও কাঠের জিনিস কিনব।
মোহনগঞ্জ থেকে মিষ্টান্ন নিয়ে মেলায় বসেছেন রতন কুরি। সঙ্গে পণ্য বেচায় সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী মিতা কুরি।
রতন কুরি বলেন, ‘এইহানে মেলায় সাত বছর ধইরা আই। দোকান লইয়া বই। ভালা বেচা অয়। এইবারও বেচতাছি। তবে মানুষ কম। করোনা, হরতাল। এরপরেও মানুষ আইতাছে। রাইত ১০টা নাগাদ মেলা চলে। ভালাই লাগে। লাভও অয়। মেলাও দেহি।’
কলমাকান্দা সিদলী থেকে এসেছেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই মেলাডাত আই। ভালা লাগে। আনন্দ লাগে। এইডা সবারই মেলা। হিন্দু-মুসলমানের সবাইর। মেলায় জিলাপি খাইছি। বাড়ির পোলাপানের লাইগ্যা খেলনাপাতি কিইন্যা নিবাম।’
হাতকুন্ডলী কামাক্ষা মন্দিরের পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্মল চন্দ্র সাহা জানান, ‘এবার ১৩০তম দোলযাত্রা উৎসব হচ্ছে মন্দিরে। অন্য বছরের মতো এবারও মন্দির প্রাঙ্গণে মেলা বসেছে। মেলায় দুই শতাধিক ব্যবসায়ী তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় বাঁশ, কাঠের তৈরি পণ্যের পাশাপাশি মাটির তৈজসপত্র, মিষ্টান্ন, খেলনাপাতিসহ হরেক রকমের পণ্য কেনাবেচা হচ্ছে।