হরতাল ডেকেছে হেফাজতে ইসলাম। অথচ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে ছাত্রলীগ ও শিবিবের মধ্যে। হেফাজতের হরতাল চলাকালে রোববার দুপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায়।পুলিশ বলছে, হরতালের সমর্থনে রোববার সকালে সিলেটের সড়কে অবস্থান নেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। দুপুরের আগেই সড়ক ছেড়ে যায় তারা। আর দুপুরে নগরের বন্দরবাজার এলাকায় জড়ো হন শিবিরের নেতা-কর্মীরা।
আগে থেকেই এই এলাকায় ছিল আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। শিবির জড়ো হতে চাইলে দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। এ ছাড়া পুলিশ পাঁচ শিবিরকর্মীকে আটক করে।কেবল বন্দরবাজারই নয়, রোববার হেফাজতে ইসলামের হরতালে সিলেট নগরের বিভিন্ন সড়কে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের জড়ো হয়ে পিকেটিং করতে দেখা গেছে।এর আগে গত শনিবার সকালেও হেফাজতের হরতালের সমর্থনে নগরের নয়াসড়ক এলাকায় মিছিল করে ছাত্রশিবির। ওই মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হলে পুলিশ ১৪ জনকে আটক করে।রোববার দুপুরে নগরের শিবগঞ্জ এলাকায় পিকেটারদের কবলে পড়েন স্থানীয় দৈনিক জৈন্তাবার্তার সম্পাদক ফারুক আহমদ। এ সময় পিকেটাররা তার গাড়ি ভাঙচুর করেন।ফারুক আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাঙচুরকারীরা কেউই মাদ্রাসাছাত্র নন। তারা সকলেই শিবির ও ছাত্রদলের চিহ্নিত নেতা-কর্মী।’এই ঘটনার আগেই নগরের বন্দরবাজার এলাকায় শিবিরের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
বন্দরবাজার এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের অবস্থান
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, হরতালের বিরুদ্ধে সকাল থেকেই সিলেটের বন্দরবাজার এলাকায় অবস্থান নেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। দুপুরে বের করা হয় বিক্ষোভ মিছিলও। চৌহাট্টা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘুরে আবার বন্দরবাজার কামরান চত্বরে এসে অবস্থান নেন তারা।
এ সময় নগরের মহাজনপট্টি গলি থেকে বের হয়ে শিবির নেতা-কর্মীরা বন্দরবাজার এলাকায় জড়ো হতে চেষ্টা করেন। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
মুহূর্তেই এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় অন্তত ১০টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন আহত হন এবং পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ।সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদ বলেন, যে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে তারা সবাই শিবিরকর্মী। আটক সবার পরনেই ছিল জিন্স ও টি-শার্ট। তারা কেউ মাদ্রাসাছাত্র নয়।তিনি বলেন, হেফাজতের কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবেই অবস্থান নিয়েছিলেন। তবে দুপুরের দিকে শিবির মাঠে নেমে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের প্রতিহত করেছে। ওসি বলেন, এর আগে শনিবারও শিবির ঝটিকা মিছিল করে নাশকতার চেষ্টা করে। ওই মিছিল থেকে পুলিশ ১৪ জনকে আটক করেছে।সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান বলেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে হেফাজত, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি একসঙ্গে মাঠে নেমেছে। তাদের সহিংস কর্মসূচি প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগ সব সময় মাঠে থাকবে। রাজপথেই মৌলবাদীদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে।মোদিবিরোধী বিক্ষোভের নামে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালান হেফাজতের কর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি করে পুলিশ। এতে কয়েকজন নিহত হন। পরে শনিবার বিক্ষোভ ও রোববার হরতালের ডাক দেয় ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম।