হরতালে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে ব্যাপক সহিংসতা করেছেন হেফাজতের কর্মীরা। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি তারা পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)সহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন সহিংসতায়।
আজমিরীগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের নোয়াগড় এলাকায় রোববার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার সময় মসজিদের মাইক ব্যবহার করেন ধর্মভিত্তিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো করা হয় কর্মী-সমর্থকদের।
সংঘর্ষের সময় তারা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর ও দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়।
আজমিরীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু হানিফ নিউজবাংলাকে জানান, ‘নোয়াগড় এলাকায় হেফাজতে ইসলামের সমর্থকরা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে রাখেন। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন তারা। একপর্যায়ে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। এতে আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি নুরুল ইসলামসহ আরও পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।’
ওসি কীভাবে আহত হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার গায়ে ইট-পাটকেল লাগার পাশাপাশি তাকে লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে।’
হেফাজতের কর্মীরা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন
একসময় হেফাজতের সমর্থকরা মাইকে ঘোষণা দিয়ে আবারও পুলিশের ওপর হামলা চালান। পুলিশ তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩৩টি রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে হেফাজতের কর্মীরা পিছু হটতে বাধ্য হন।
পরিদর্শক আরও জানান, উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
হেফাজতের কর্মীরা যা যা করেছেন
দুই দিন ধরে সহিংস ব্রাহ্মণবাড়িয়া সকাল থেকে জ্বলছে হেফাজতের কর্মীদের আক্রমণে।
তারা হামলা করেছেন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, ঘরবাড়ি, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়িতে।
তারা জেলা পরিষদ কার্যালয়ে, পৌরসভা কার্যালয়ে, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এবং সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি ও কার্যালয়, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি, ভূমি অফিসে, আয়কর আইনজীবী ও আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল হক ভূঁইয়ার কার্যালয়, জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ও শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ চত্বরে আয়োজিত উন্নয়ন মেলায় আগুন দিয়েছে।
আগুন দেয়া হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে রেললাইনের কাঠের পাটাতনে।
ভাঙচুর করেছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়, ব্যাংক এশিয়া, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, সুরসম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতায়ন এবং পরিবার ও পরিকল্পনা কার্যালয়ে।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম জালাল উদ্দিনকে পেটানো হয়েছে। হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে হামলা হয়েছে পুলিশের ওপর।
কিশোরগঞ্জেও আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন তারা। নারায়ণগঞ্জে হামলা হয়েছে সাংবাদিকদের ওপর। ছবি তুলতে গেলেই ছিনিয়ে নেয়া হয় ক্যামেরা, মোবাইল ফোন।