বরগুনার বেতাগীর সরিষামুড়ি ইউনিয়নে ভাড়াটে সন্ত্রাসী সন্দেহে ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকেলে আটক ব্যক্তিরা ওই এলাকার বাসিন্দা নন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সরিষামুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন শিপন বলেন, ‘নির্বাচনে আমার লোকজনের ওপর হামলা করতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউসুফ শরীফ বরিশাল ও ঝালকাঠি এলাকা থেকে অর্ধশতাধিক বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া করে আনে। খবর পেয়ে আমার সমর্থকরা ১২ জনকে খুঁজে বের করে পুলিশে সোপর্দ করে।’
তিনি বলেন, ‘চার মাস আগে ইউসুফ বাহিনী আমাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে দুই পা প্রায় বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আমি এখন পঙ্গু অবস্থায় নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমার করা মামলায় দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে থাকার পর সে জামিন নিয়ে এলাকায় আসে। ১২ মার্চ সে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’
ইমাম হোসেন শিপন অভিযোগ করে বলেন, ‘সর্বশেষ ২৩ মার্চ আমার কর্মী রফিক বিশ্বাসকে কুপিয়ে জখম করে ইউসুফের লোকজন। রফিক এখন ঢাকায় চিকিৎসাধীন।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউসুফ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মিলাদ থাকায় বরিশাল থেকে আমার কিছু স্বজন আসেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বাধার কারণে তারা এলাকার অন্য স্বজনদের বাসায় অবস্থান নিয়েছিল। এ খবর জেনে নৌকার সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা করে। এতে আমার অন্তত ১০ সমর্থক আহত হয়েছেন।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘যাদের থানায় আটক রাখা হয়েছে তারা সবাই বহিরাগত। আটক ব্যক্তিদের পরিচয় ও তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে।’
তবে আটক ব্যক্তিদের পরিচয় জানাতে রাজি হননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।
২০২০ সালের ২০ নভেম্বর বিকেলে সরিষামুড়ির কালিকাবাড়িতে হামলার শিকার হন ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমাম হাসান শিপন জোমাদ্দার। অভিযোগ রয়েছে, তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন একই এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ শরিফ, তার দুই ছেলেসহ সমর্থকরা।
এ ঘটনায় ইউসুফ, তার দুই ছেলেসহ ১৪ জনকে আসামি করে বেতাগী থানায় মামলা হয়। এরপর থেকে পলাতক ছিলেন ইউসুফ ও তার পরিবারের সদস্যরা।
১০ মার্চ বুধবার হাইকোর্ট থেকে মামলায় জামিন পেয়ে ১২ মার্চ এলাকায় আসেন তিনি। ওই দিনও ইউসুফ ও শিপন সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হন।
হামলার শিকার চেয়ারম্যান শিপন তিন মাসেরও বেশি সময় রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি সরিষামুড়ি আসেন। পরে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নেন।