ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে সাজানো ধর্ষণ মামলায় এক ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বরগুনার ওই ব্যক্তিকে শুক্রবার সকালে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম মো. ছগির। তিনি এক আইনজীবীর সহকারী।
এজাহার থেকে জানা গেছে, বরগুনার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের এক নারী বৃহস্পতিবার সদর হাসপাতালের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে থানায় গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেন।
বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওই নারীতে নিয়ে কথিত ধর্ষকের কর্মস্থলে যায়। সেখানে তাকে শনাক্ত করতে বললে ওই নারী ওই ব্যক্তিকে চিনতে পারেননি। এতে পুলিশের সন্দেহ হলে ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ওই নারী পুলিশকে জানান, একটি মামলা সূত্রে ছগির নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ছগির নিজেই তাকে ধর্ষণ করেন এবং ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বলেন।
এরপর বরগুনার সরকারি হাসপাতালের এক কর্মচারীকে ফাঁসাতে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ করতে ওই নারীকে থানায় পাঠান ছগির। জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী আরও জানান, হাসপাতালের ওই কর্মীকে তিনি কখনও দেখেননি বা চেনেন না।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালের ওই কর্মী বলেন, ‘আমার সঙ্গে তাদের কোনো শত্রুতা নেই। তবে আমার স্ত্রীর বোনের সঙ্গে তার অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী স্বামীর সম্প্রতি ডিভোর্স হয়েছে। তারা আমার শ্যালিকাসহ আমাদের নানাভাবে হয়রানি করছেন।
‘আমার মনে হয়, ওই প্রবাসীর ইন্ধনেই উকিলের সহকারী ছগির আমাকে ফাঁসাতে এই মামলা দিতে চেয়েছিলেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচার চাই।’
বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম জানান, ধর্ষণের ভুয়া অভিযোগ নিশ্চিত হওয়ার পর ওই নারী বিষয়টি স্বীকার করেন। তার দেয়া তথ্যেরভিত্তিতে ছগিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছেন কি না সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম জানান, মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে কাউকে ফাঁসানোর কোনো সুযোগ নেই।
‘ওই নারীর মুখের বয়ান অনুযায়ী ছগিরকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছি। সেই সঙ্গে ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’