ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদ্রাসার ছাত্রদের সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত হওয়া তিন মামলায় অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চার হাজার মানুষকে আসামি করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর থানা পুলিশ শনিবার দুপুরে এই মামলা করেছে।
পীরবাড়িতে পুলিশের উপর হামলা ও কাউতলী এলাকায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আগুন দেয়া ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা তিনটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম।
তিনি বলেন, সহিংসতার ঘটনায় ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। মাদ্রাসা ছাত্রদের সঙ্গে ১৫ থেকে ২২ বছর বয়সী কিশোর-তরুণরাও তাণ্ডবে অংশ নিয়েছিল। তারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের গ্যারেজে সিআইডির এসপির গাড়িসহ পাঁচটি গাড়িতে আগুন দেয়।
জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে ওসি বলেন, এসব ঘটনায় আরও মামলা প্রক্রিয়াধীন।
শুক্রবার যা যা করেছে হেফাজত
স্থানীয় জামিয়া ইসলামিয়া ই্উনুছিয়া মাদ্রাসা থেকে ছাত্রদের একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। তারা শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে। এরপর সদর থানা ঘেরাও করে শহরের ঘোড়াট্টির দুটি সেতুতে আগুন দেয়া হয়। সার্কিট হাউজে দরজা-জানালাসহ ১০টি গাড়িও ভাঙচুর করে তারা।
ছাত্ররা তাণ্ডব চালায় শহরের রেল স্টেশনেও। সেখানে বিভিন্ন স্থাপনার পাশাপাশি আগুন দেয়া হয় রেল লাইনে। আট ঘণ্টা বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট লাইনে সাতটি ট্রেন আটকা পড়ে বিভিন্ন স্টেশনে।
মাদ্রাসা ছাত্রদের এই হটকারিতার ফল ভোগ করছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী। সিগন্যালিং ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শহরে আর কোনো ট্রেন থামছে না। কবে চালু হবে, সেটাও অনিশ্চিত।
স্টেশনে হামলার পর সন্ধ্যায় মাদ্রাসার ছাত্ররা পুলিশ সুপার কার্যালয়, জেলা মৎস্য অধিদপ্তর, আনসার ক্যাম্প গিয়ে পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আগুনে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পাঁচটি গাড়ির সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়।
মৎস্য অধিপ্তরের গ্যারেজের ভেতর আগুনের কারণে অফিসের আইটি কক্ষের তিনটি কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ যাবতীয় আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
এ ব্যাপারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক আবদুন নুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুক্রবার মাদ্রাসার ছাত্ররা যে বর্বরচিত ঘটনা দেখিয়েছে তা নিন্দাজনক। শহরের পরিস্থিত স্বাভাবিক মনে হলেও জনমনে রয়েছে আতঙ্ক। ভয় রয়েছে আবারও হয় এ রকম ঘটনা ঘটে যাবে।’