বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টপ টেন লুটের দুই আসামি কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামে

  •    
  • ২৬ মার্চ, ২০২১ ১৬:০১

কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের নেতারা বলছেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তাকে কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে। ফোরামে আসামি থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

বরিশালে টেইলারিং ব্র্যান্ড টপ টেন শোরুমে হামলা ও লুটপাটের মামলার দুই আসামি কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামেরও সদস্য। এদের মধ্যে একজন সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগে হামলার ঘটনাতেও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

নানা অপরাধে অভিযুক্তরা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সদস্য হওয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নতুন বিতর্ক। আসামিরা কীভাবে এই ফোরামের সদস্য হয় তা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে।

কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের নেতারা বলছেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তাকে কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে। ফোরামে আসামি থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

৭ মার্চ বরিশালে টপ টেন শোরুমে হামলা ও লুটপাটের ঘটনার মামলার ১০ নম্বর আসামি সৈয়দ আলিফ হোসেন হীরা এবং ১৬ নম্বর আসামি বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মচারী মারুফ হাসান টিটু।

তাদের মধ্যে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগে আলোচিত হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন হীরা।

টপ টেন শো রুমে হামলার দৃশ্য ধরা পড়ে সিসিটিভিতে। ছবি: নিউজবাংলা

আলোচিত ওই দুটি ঘটনায় জড়িত যুবকরা রয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামে। হীরা রয়েছেন ফোরামের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদে। আর মারুফ রয়েছেন একই ফোরামের দপ্তর সম্পাদক পদে।

যারা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে সহযোগিতা করবে তারাই হামলা ও লুটপাটের মামলার আসামি হওয়ায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের এলাকাভিত্তিক বেশ কয়েকটি কমিটি যাচাই-বাছাই ছাড়া করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

২০ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের দুই সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, টপ টেন হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় বর্তমানে জেল হাজতে থাকা মারুফ ও হীরা দুইজনই বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতাদের অনুসারী।

মারুফ হাসান টিটু নিজেই জেলা ছাত্রলীগের নেতা। তার বিরুদ্ধে টপ টেন শোরুমে হামলা ও লুটপাটের নেতৃত্ব দেয়ার মতো অভিযোগ থাকলেও তাকে এখন পর্যন্ত বহিষ্কার করা হয়নি জেলা ছাত্রলীগের পদ কিংবা বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে। টানা ১৬ দিন কারাগারে রয়েছেন এই মামলার ১৯ আসামি। এদের মধ্যে শুধু সাংগঠনিক পদে আছেন মারুফ হাসান টিটু।

২০নং ওয়ার্ড কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তাকে কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে। মারুফ কমিটিতে রয়েছে। তবে সে কোনো মামলায় রয়েছে কি না সেটি জানা নেই।’

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, ‘কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামে রাজনৈতিক আঁচড় রয়েছে বরিশালের কমিটিগুলোতে। আঁচড়মুক্ত করা না গেলে সাধারণ মানুষের চাওয়াপাওয়া থাকছে না। ‘শহরে কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম গঠন করা হয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সামনে রেখে। অথচ শহরে বিভিন্ন অরাজকতায় ক্ষমতাসীন দলের লোকজন জড়িত। তাই সতর্কতার সঙ্গে কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম গঠন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে পুলিশকেও সচেতন থাকতে হবে। সন্ত্রাসী বা মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কোনোমতেই কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সদস্য হতে পারে না।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী কমিশনার শারমিন সুলতানা রাখি বলেন, ‘নতুন করে কমিটি হয়নি। প্রথম যে কমিটি হয়েছিল সেই কমিটি বহাল রয়েছে। মামলার আসামিরা এই ফোরামে রয়েছে কি না সেটা খোঁজ নেয়া হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

গত ৭ মার্চ বরিশালের টপ টেন শোরুমে হামলা ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় পরদিন ৮ মার্চ বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় ২১ জনের নামসহ ২৫/৩০ জনকে আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করে টপ টেন কর্তৃপক্ষ।

হামলা ও লুটপাটের সময় পাঁচজনকে হাতনাতে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়। পরে মামলার নামধারী ১৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় কোতোয়ালি মডেল থানা কম্পাউন্ড থেকে। তাদের বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক আনিছুর রহমান নামধারী ১৯ আসামিকে কারাগারে পাঠান।

পাশাপাশি এই ১৯ আসামির মধ্যে একজনের বদলে অন্য একজন কারাগারে রয়েছেন বলে নিউজবাংলার অনুসন্ধানে উঠে আসে। ২১ নম্বর আসামি মাজহারুল ইসলাম সোহানের বদলে তারই কর্মচারী ১৫ বছর বয়সী কিশোর আল আমিন নিজের নামের সঙ্গে সোহান যুক্ত করে অর্থের বিনিময়ে স্বেচ্ছায় জেল হাজতে রয়েছে বলে রিপোর্ট প্রকাশিত হয় নিউজবাংলায়। এরপরেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম আল আমিনসহ ৫ জন আসামির রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ওই ৫ জনকে একদিন করে রিমান্ড দেন।

এ বিভাগের আরো খবর