আবারও পিছিয়ে গেল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বিটঘর বধ্যভূমিতে শহীদদের নাম ফলক ও স্মৃতেসৌধের উদ্বোধন।
বৃহস্পতিবার এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়ে তিনবার শহীদদের নাম ফলক ও স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন পেছানো হলো।স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধদের সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বিটঘরের বধ্যভূমিতে ৮০ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। আর এই জমির মালিক ছিলেন শহীদ শামসুল হক। তিনিও এই বিটঘর বধ্যভূমিতেই পাকিস্তানি সেনাদের হাতে শহীদ হন।
পরে ৮০ জন শহীদসহ স্বামীর শেষ সময়ের রক্তমাখা স্থানটিকে আগলে রাখেন শহীদ শামসুল হকের স্ত্রী মালেকা খাতুন। তিনি চেয়েছিলেন এই স্থানটিতে শহীদদের জন্য কিছু একটা করা। তাই মালেকা খাতুন ২০০৪ সালে ১৫ শতক জমিটি বধ্যভূমি হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারকে লিখে দেন।
তারপর বর্তমান জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান যোগদান করার পর তিনি বধ্যভূমি প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে আমলে নেন। পরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সাড়ে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে বধ্যভূমিতে আটটি নামফলক ও একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইসমত আলী জানান, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এটি উদ্বোধনের জন্য তিনবার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তখন এর উদ্বোধন স্থগিত করা হয়।
এবার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কে হবেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন আটকে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
১১ মার্চ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে বিটঘর বধ্যভূমিতে শহীদদের নামফলক ও স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন করা হবে।
এতে সভাপতিত্ব করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল হক ও অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হবেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান। এক সাংসদ বধ্যভূমির উদ্বোধন করতে চান। কিন্তু এটি মুক্তিযোদ্ধারা কেউ চান না।
এ সম্পর্কে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, ‘বিটঘর বধ্যভূমির নামফলক ও স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হবেন জেলা প্রশাসক এবং উদ্বোধন করবেন শহীদজায়া মালেকা খাতুন। এর ব্যত্যয় ঘটলে আমরা তা মেনে নিতে পারি না।’