বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গাইবান্ধায় বিস্ফোরণ: ঘরের চালার সঙ্গে উড়ে যান রানা

  •    
  • ২৫ মার্চ, ২০২১ ০২:০৭

প্রতিবেশীরা বলছেন, অপরিচিত দুই যুবক বেলা ৩টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বোরহানের বাড়িতে যান। কিছুক্ষণ পর একই গ্রামের অহেদুল মিয়া ঢোকেন। পরে বিকট শব্দে বোরহানের একটি সেমিপাকা ঘরের চালা উড়ে পাশের জমিতে পড়ে। এ সময় রানা মিয়া নামে ওই যুবকের মরদেহও জমিতে পড়ে।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে একটি বাড়ির ঘরে বিস্ফোরণে নিহত তিনজনের একজন রানা মিয়া। বিস্ফোরণে চালার সঙ্গে উড়ে গিয়ে পাশের জমিতে পড়েন এই যুবক। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মেকুরাই নয়াপাড়া গ্রামে কাসেম মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিনের বাড়িতে এই বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বাড়ির মালিক বোরহান উদ্দিন, গ্রামের অহেদুল মিয়া ও মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিড়াডাঙ্গা গ্রামের রানা মিয়া নিহত হন।

পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণে বোরহানের ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ক্ষতচিহ্ন রয়েছে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে। রানা মিয়ার বাম হাতের কবজি উড়ে গেছে। বুকেও ছিদ্র হয়েছে। অহেদুল মিয়ার হাতেও রয়েছে ক্ষতচিহ্ন।

তবে কেন বা কী বস্তু থেকে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা নিশ্চিত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিস্ফোরণের কারণ উদঘাটনে ঢাকা থেকে গাইবান্ধার পথে রয়েছে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল।

এ ঘটনায় বাড়ির মালিক বোরহানের মা, স্ত্রীসহ পরিবারের পাঁচজনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণের পর শরীরে ক্ষত নিয়ে পালানোর সময় মশিউর রহমান নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। তার বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায়।

প্রতিবেশীরা বলছেন, অপরিচিত দুই যুবক বেলা ৩টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বোরহানের বাড়িতে যান। এর কিছুক্ষণ পর একই গ্রামের অহেদুল মিয়া ওই বাড়ি ঢোকেন। পরে বিকট শব্দে বোরহানের একটি সেমিপাকা ঘরের চালা উড়ে পাশের জমিতে পড়ে। এ সময় রানা মিয়া নামে ওই যুবকের মরদেহও জমিতে পড়ে।

নিহত একজনের মরদেহ ঘিরে রাখেন এলাকাবাসী

বুধবার রাত ১২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় বাড়িটি ঘিরে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ওই বাড়িসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গ্রামবাসী রয়েছেন অজানা আতঙ্কে।

স্থানীয় লোকজন জানান, বাড়ির মালিক বোরহান উদ্দিন কুয়েতপ্রবাসী। পাঁচ বছর আগে তিনি গ্রামে ফেরেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক বা জঙ্গি সংশ্লিষ্ট সংগঠনে যুক্ত ছিলেন বলে তাদের জানা নেই। সবাই তাকে ভালো বলেই জানেন।

বোরহানের বগুড়ার ফাঁসিতলায় ট্রাকের ব্যবসা রয়েছে বলে জানান প্রতিবেশীরা।

প্রতিবেশী আজিজ মিয়া বলেন, ‘বোরহান ভালো চেংরা (মানুষ)। ও কোনো ঝামেলায় যেত না। তার বাড়িত কেমন এত বড় একটা ঘটনা ঘটিল। তিন তিনটে লাশ; এটা কেমন কথা!’

মামুন মিয়া নামে আরেক প্রতিবেশী বলেন, ‘এই ঘটনার পর আমরা অনেক ভয়ে আছি। ঘর থেকে বের হইতে সাহস হয় না। নারী ও শিশুরা আরও ভয়ে আছে। আমার জীবনে গ্রামে এ রকম ঘটনা দেখিনি।’

বোরহানের বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান। ছবি: নিউজবাংলা

গাইবান্ধা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল লতিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে। সিআইডির বিশেষ টিম, পিবিআই এবং গাইবান্ধার বোমা বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।’

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, ঢাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল গোবিন্দগঞ্জের উদ্দেশে রওনা করেছে। তারা না আসা পর্যন্ত বিস্ফোরণের কারণ সঠিকভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি জানান, পরিত্যক্ত ঘরটিতে বিস্ফোরিত হওয়ার মতো কোনো সিলিন্ডার বা অন্য কোনো বস্তু পাওয়া যায়নি। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

নিহত তিনজনের মরদেহ থানায় নেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো বৃহস্পতিবার গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এ বিভাগের আরো খবর