আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা উপ-পরিষদের সদস্য ও ফরিদপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এম শাহরিয়ার রুমি মারা গেছেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার ভাই জুবায়ের জাকির।
রুমির ছোট ভাই কামরুজামান কাফি জানান, চার বছর আগে রুমির দুটি কিডনি অকেজো হয়ে যায়। সপ্তাহে তিনবার তার ডায়ালাইসিস করা হতো। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তার হার্ট অ্যাটাক হলে ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওইদিনই তার হার্টে অ্যানজিওপ্লাস্টের মাধ্যমে রিং বসানো হয়। এরপর ব্রেইন স্ট্রোক হওয়ায় তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।
নিউরো বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ ২ মার্চ ইউনাইটেড হাসপাতালে দেখার পর রুমিকে সিএমএইচে নেয়ার পরামর্শ দেন। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে থাকায় গত ৬ মার্চ তার শরীরে আরও তিনটি অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর রুমিকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়।
তিনি জানান, রুমির প্রথম জানাজা হয় বাদ জোহর সিএমএইচ-এ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এবং বাদ জোহর ফরিদপুর শেখ জামাল স্টেডিয়ামে জানাজা হবে। এরপর তাকে ঢাকার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হবে।
শাহরিয়ার রুমি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও বাংলাদেশ সংবিধানের রচয়িতাদের অন্যতম সদস্য প্রয়াত আইনজীবী শামসুদ্দিন মোল্লার বড় ছেলে।
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা রুমি ছাত্রাবস্থাতেই ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের সাবেক ভিপি ও জিএস ছিলেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তিনি ক্রীড়াঙ্গনেও অবদান রেখেছেন। তিনি আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ফরিদপুর জেলা আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ, ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহাসহ অনেকে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
তিনি স্ত্রী ও এক ছেলে রেখে গেছেন।