চুয়াডাঙ্গায় বালু তোলাকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জেরে জাহাঙ্গীর মল্লিক নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার বেলা ১টার দিকে সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জাহাঙ্গীর উপজেলার নুরুল্লাহপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং তিতুদহ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি বালু ব্যবসায়ী ছিলেন। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুরে ছয়ঘরিয়া গ্রামে ট্রাক্টরে করে বালু আনতে যান জাহাঙ্গীরসহ আরও কয়েকজন। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়। অন্যরা পালাতে সক্ষম হলেও জাহাঙ্গীর ধরা পড়েন। তাকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাহাঙ্গীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নিউজবাংলাকে বলেন, সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শুকুর আলীর সঙ্গে ছয়ঘরিয়া গ্রামের যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিনের বিরোধ রয়েছে। জাহাঙ্গীর শুকুর আলীর বালু তদারকি করতেন। সম্প্রতি ছয়ঘরিয়া গ্রামের তিস্তা নদী থেকে বালু তুলে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের খামারের পাশেই একটি স্থানে রাখেন শুকুর আলী। পূর্ব বিরোধের জেরে সেই বালু দখল নিয়ে বিক্রি বন্ধ করে দেন যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিন।
জাহাঙ্গীরের ভাই ইকবাল হোসেন জানান, বালু তোলা ও চাঁদা দাবি নিয়ে একটি পক্ষের লোকজনের সঙ্গে জাহাঙ্গীরদের বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জের ধরেই জাহাঙ্গীরকে কোদাল, ব্যালচা ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
তিতুদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শুকুর আলী জানান, ‘জাহাঙ্গীর আমার বালুর ব্যবসা দেখাশোনা করত। দুপুরে সে বালি উত্তোলনের জায়গায় গেলে তার ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় অংশ নেয় রাজনৈতিক দলের একটি অঙ্গসংগঠনের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এর আগে তোলা বালু বিক্রি করতে গেলে চাঁদা দাবি করা হয়। এ ঘটনায় আমি মামলাও করি।’
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান বলেন, জাহাঙ্গীরের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার বাম হাত ভাঙা ছিল। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাহাঙ্গীর।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ বা মামলা করেননি কেউ। জড়িত ব্যক্তিদের আটক করতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।