নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। তাকে তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছিল পুলিশ।
জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক নবনীতা গুহ মঙ্গলবার তাকে জামিন দেন। সন্ধ্যায় জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান বাদল।
নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় করা তিন মামলায় জামিন পেলেন তিনি।
বাদলের আইনজীবী হারুন-উর-রশিদ হালদার জানান, গত ৯ মার্চ বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা ও বাদলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়।
পুলিশ ১১ মার্চ বাদলকে আটকের পর বিস্ফোরক আইন এবং প্রতিপক্ষের ওপর হামলা মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখায়। তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় পুলিশের ওপর হামলার মামলাতেও।
আইনজীবী হারুন জানান, তিন মামলার মধ্যে সকালে দুটি ও বিকেলে একটি মামলায় বাদলকে জামিন দেন বিচারক।
এ ঘটনার পর কোম্পানীগঞ্জে আগুন জ্বালানোর হুমকি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন কাদের মির্জা।
ওই পোস্টে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই কাদের মির্জা লেখেন, ‘সাংবাদিক মুজাক্কিরকে নিজ হাতে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসী মিজানুর রহমান বাদল। তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর জোর দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় কোম্পানীগঞ্জে আগুন জ্বলবে।’
বাদল কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও বসুরহাটের মেয়র আবদুল কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত। মুক্তির পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে সমাবেশে বাদল বলেন, ‘এই কোম্পানীগঞ্জ ছিল একটি শান্তির জনপদ। এই শান্তির জনপদকে নষ্ট করেছে আবদুল কাদের মির্জা।’
তিনি আরও বলেন, ‘হয়তো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমাকে কারাগারে যেতে হয়েছে। আমি কারাগারে গিয়েছি, তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই। কিন্তু আমি শান্তি চাই। কোম্পানীগঞ্জবাসী শান্তিকে থাকুক, এটাই আমি চাই।’
মুক্তির পর কোম্পানীগঞ্জের চাপরাশিরহাট বাজারে সমাবেশে বক্তব্য দেন বাদল
৯ মার্চ বসুরহাট পৌর এলাকায় বাদলের সমর্থকদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় মেয়র কাদের মির্জার সমর্থকদের। রাতে পৌর চত্বরে গুলিতে প্রাণ হারান আলাউদ্দিন নামে এক শ্রমিক লীগের কর্মী। গুলিবিদ্ধ হন অন্তত ১৩ জন। এ ছাড়া আহত হন অন্তত ৩০ জন।
গুলি ও হামলার ওই ঘটনা ‘একতরফা’ দাবি করে কাদের মির্জা বলেছিলেন, ‘কিছু প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যম সেই রাতের ঘটনাকে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বলে প্রচার করেছে, যা সত্যি নয়।’