হবিগঞ্জ জেলায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক বর্জ্যে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে সেখানকার খাল-বিল, নদী-নালা। এসব খাল বিলের বিষাক্ত পানি পান করে মারা যাচ্ছে হাঁস-মুরগ ও গবাদি পশু।
সোমবার মাধবপুর উপজেলার একটি খালের বিষাক্ত পানি পান করে একটি বাছুর মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা গেছে, এক্তিয়ারপুরে মো. রেনু মিয়া নামে এক কৃষকের গৃহপালিত বাছুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা খালের পানি পান করে। এরপরই বাছুরটি মারা যায়।
এ ঘটনায় ওই এলাকার কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
মো. রেনু মিয়া বলেন, ‘আমার ওই একটিই বাছুর ছিল। এক্তিয়ারপুরে খালের পাশে মাঠে বাছুরটি প্রতিদিন ঘাস খেত। সোমবারও বাছুরটি ঘাস খাচ্ছিল। খাওয়ার এক পর্যায়ে বাছুরটি খালে গিয়ে পানি পান করে। এরপরই বাছুরের পেট ফুলে যায়। পরে আমাদের গ্রামের পল্লী চিকিৎসকে ডেকে আনলে তিনি জানান বাছুরটি মারা গেছে।
পরিবেশকর্মী ও এক্তিয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা ‘মার লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানির কারখানার পানি এক্তিয়ারপুর খালে পড়ছে। এতে খালের পানি একেবারে কুচকুচে কালো আকার ধারণ করেছে। গ্রামের মানুষ এই খালের পানি দিয়ে কৃষিকাজসহ কোন ধরণের কাজই করতে পারছেন না। বিভিন্ন সময় ওই খালের পানি খেয়ে হাঁস-মুরগি মারা গেছে। এখন একটি বাছুর মারা গেল, যা খুবই উদ্বেগের বিষয়।’
এ ব্যাপারে জানতে মার লিমিটেডের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, ‘প্রাকৃতিক গ্যাস, কৃষিজমির সহজলভ্যতা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকার জন্য এই অঞ্চলে বৃহৎ এবং মাঝারি আকারের অনেক কলকারখানা গড়ে উঠেছে। জেলার বিশাল এলাকা নিয়ে কল কারখানা গড়ে উঠলেও এগুলোর কার্যক্রম দেখভালের জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ নেই।
‘ফলে কলকারখানার মাধ্যমে সব ধরণের দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। খাল-বিল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি মাছ। অসহনীয় দুর্গন্ধ এবং দূষণের ফলে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে গেছে বহু গুণ। শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃ্ষ্টি আকর্ষণ করছি।’