আগুনে পুড়ে গেছে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীর চারটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চার হাজারের বেশি বসতঘর ও দোকান।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের একজন ৯ নম্বর ক্যাম্পের বি-৮ ব্লকের বাসিন্দা আবদুর রহমান।
আগুনের ভয়াবহতা জানাতে গিয়ে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, তারা কোনোমতে জীবন নিয়ে বের হয়ে এসেছেন। কিছুই বাঁচাতে পারেননি। ঘরের আসবাব সব পুড়ে গেছে।
আবদুর রহমান বলেন, যখন তারা দৌড়ে পালাচ্ছিলেন, আগুন যেন তাদের তাড়া করছিল। মুহূর্তের মধ্যেই সবকিছু পুড়ে শেষ হয়ে যায়।
৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা রহিম মিয়াও ক্ষতিগ্রস্ত এই আগুনে। ক্যাম্পের পাশে বলিবাজারে দাঁড়িয়ে সোমবার সন্ধ্যায় বিলাপ করছিলেন তিনি।
বলছিলেন, ‘আগাগোড়া বেগ্গিন (সব) পুড়ি গেইয়ি। আরার (আমাদের) ব্লকত ৮৫ ঘর আছিল। বেগ্গিন জ্বলি গেইয়ি। অন দরনর (আগুন লাগার) পর আত্মীয়স্বজন বেগ্গুন গেইয়িগুই। এহনো হনো কিয়ার হবর (খবর) না পাই। হন হডে (কে কোথায়) আছে এহনো হইত ন পারির। বার্মাত্তুন আঁরা করচোর (কাপড়) লইয়্যেরে আইত পাইজ্জি। কিন্তু এনডে করচোর লইত ন পারি। আরা ধ্বংস অই গেয়।’
ক্যাম্পে আগুন লাগার পর সড়কে অবস্থান নেয় রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষরা। ছবি: নিউজবাংলা
বালুখালী ক্যাম্পের বলিবাজারে ওষুধের দোকান ছিল উখিয়ার বাসিন্দা মো. ইকবালের। আগুনে তার দোকান পুরোটাই পুড়ে গেছে।
তিনি জানান, বিকেলে দোকানে থাকা অবস্থায় জানতে পারেন, দূরে কোথাও আগুন লেগেছে। বের হয়ে দেখেন, প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে আগুন জ্বলছে। এর পরপরই মালপত্র বস্তায় ভরতে থাকেন তিনি। হঠাৎ দেখতে পান দোকানের পেছনেই আগুন। তখন দৌড়ে বের হওয়ার পর পাশেই একটি পাহাড়ে আগুন জ্বলতে দেখেন।
সোমবার বিকেল ৪টার দিকে উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনের সূত্রপাত। পরে পাশের ৯, ১০ ও ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় লোকজন জানান, আগুন লাগার পর কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে চারপাশ। আতঙ্কে সড়কে অবস্থান নেয় রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষরা।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার সামছু-দৌজা জানান, বালুখালীর চার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে লাগা আগুনে চার হাজারের বেশি বসতঘর ও দোকান পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে রাত সাড়ে ৯টার দিকে।