বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শুকিয়ে যাচ্ছে ঝিরি-ঝরনা, পাহাড়ে পানির সংকট

  •    
  • ২২ মার্চ, ২০২১ ১৯:২৩

বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরুণ কান্তি চাকমা বলেন, ‘পাহাড়ে নির্বিচারে বন উজাড় করায় ঝিরি-ঝরনার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। একারণে যেমন প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, অপরদিকে পানীয় জলের সমস্যা বেড়েছে দ্বিগুণ।’ 

পার্বত্য চট্টগ্রামে বেড়েছে সুপেয় পানির সংকট। প্রতি বছর গ্রীষ্মের এ সময়ে পাহাড়ে পানির সংকট ভয়াবহ রূপ নেয়। শুকিয়ে যায় পাহাড়ি ছড়া, ঝরনা, খাল-বিল। এর প্রভাব পড়েছে রাঙ্গামাটির ১০ উপজেলার বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে।

জেলার বরকল, লংগদু, বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, বিলাইছড়িসহ সদর উপজেলার কয়েকটি দুর্গম এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট।

স্থানীয়রা বলছেন, পাহাড়ে বসবাসরত অধিকাংশ পাহাড়িরা পাননি নলকূল কিংবা রিংওয়েলের সুবিধা। বাধ্য হয়ে পাহাড়ি ঝিরি-ঝরনা ও মাটির গর্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয় তাদের। গ্রীষ্মে শুকিয়ে গেছে এসব ঝিরি ও ঝরনা। একারণে পানির সংকটও বেড়েছে।

বরকল উপজেলার ৫ নং বড় হরিণা ইউনিয়নের শুকনাছড়ি গ্রামে প্রায় ২৫০ পরিবারে প্রায় ১৫০০ মানুষের বাস। অধিকাংশ মানুষ মাটি খুঁড়ে পানি সংগ্রহ করেন। গ্রীষ্মকাল এলে পাহাড়ের ঝিরি-ঝরনা ও মাটির গর্তেও মেলে না সুপেয় পানির ব্যবস্থা।

গ্রামের এলিয়া চাকমা বলেন, ‘প্রতি বছর এ সময়ে পানির সংকট দেখা দেয়। বিশেষ করে বিঝু উৎসবের সময়ে এই সংকট তীব্র হয়। এখানে নলকূপ ও রিংওয়েল বসিয়ে পানি পাওয়া খুবই কঠিন। পাহাড়ি ঝিরি-ঝরনা থেকে পানির পাইপ দিয়ে গ্রামে পানির ব্যবস্থা করা যায়।’

সমাজকর্মী দীপেন চাকমা বলেন, ‘পানির পাইপ প্রজেক্টের মাধ্যমে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সুপেয় পানি পৌঁছানো সম্ভব। শুকনাছড়ি গ্রামবাসীদের মধ্যে সুপেয় পানি পৌঁছে দিতে পাইপলাইন প্রজেক্টের উদ্যোগ নিয়েছি। এর সম্ভাব্য খরচ এক লাখ দশ হাজার টাকার মতো।’

তিনি বলেন। ‘স্থানীয় চেয়ারম্যান ও সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি এগিয়ে আসে তাহলে ২৫০ পরিবারের সুপেয় পানির সংকট সমাধান কঠিন কিছু নয়।’

বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরুণ কান্তি চাকমা বলেন, ‘দুর্গম এলাকায় টিউবওয়েল বসালেও তেমন সুফল পাওয়া যায় না। তাই টিউবওয়েবগুলো এমন এলাকায় দেয়া হয়েছে যেখানে পানি পাওয়া যায়। এছাড়া দুর্গম এলাকাতে রিংওয়েলের কোনো বরাদ্ধ না থাকায় চাহিদা অনুযায়ী পানির ব্যবস্থা করা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে নির্বিচারে বন উজাড় করায় ঝিরি-ঝরনার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। একারণে যেমন প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, অপরদিকে পানীয় জলের সমস্যা বেড়েছে দ্বিগুণ।’

বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের ছাক্রাছড়ি গ্রামের বাসিন্দা নীলা চাকমা বলেন, ‘সদর উপজেলা হলেও ছাক্রাছড়ি গ্রাম দুর্গম। এখানে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক পর্যন্ত ভালো করে পাওয়া যায় না। এই গ্রামে প্রধান সমস্যা হচ্ছে সুপেয় পানি।’

তিনি বলেন, ‘গ্রামে প্রায় ৪০০ মানুষের বসবাস। একটি রিংওয়েল থেকেই বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে হয় সবাইকে। এ সময়ে তীব্র পানির সংকট দেখা দেয়। ইউনিয়ন পরিষদ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদফতরে নলকূপের জন্য অনেকবার আবেদন করা হয়েছে। তবুও কোনো ব্যবস্থা হয়নি।’

রাঙ্গামাটি জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিবছর এ সময়ে সুপেয় পানির সংকট দেখা দেয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর থেকে প্রতি বছর ইউপি চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানে গভীর নলকূপ ও রিংওয়েল স্থাপন করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘পাহাড়ি এলাকার মাটি পাথুরে হওয়ায় যেকোনো জায়গায় নলকূপ বসানো যায় না। মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই নলকূপ বসানোর চেষ্টা করা হয়।’

এ বিভাগের আরো খবর