ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ‘যৌতুক মামলা তুলে না নেয়ায়’ ইয়াসমিন আক্তার নামের এক গৃহবধূকে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে পেটানোর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের বালিহাটা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী শহিদুল ইসলামের মেয়ে। তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আবেদন করেন।
গত ১০ মার্চ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের বালিহাটা গ্রামে ইয়াসমিনকে নির্যাতনের ওই ঘটনা ঘটে।
ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ফুফাতো ভাই পাভেল মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এর পর থেকেই যৌতুকের জন্য নির্যাতন শুরু করেন তার স্বামী। যৌতুক না দেয়ায় এরই মধ্যে ‘দুইবার গর্ভপাত’ করিয়েছেন স্বামী পাভেল ও তার পরিবারের লোকজন।
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছরের ১ নভেম্বর ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন আমাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আট দিন চিকিৎসা নিই।
‘কিছুটা সুস্থ হয়ে ৮ নভেম্বর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করি। ওই মামলায় পাভেল মিয়াকে ১ মার্চ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।’
১০ মার্চ দুপুরে এই মামলা তুলে নেয়া না হলে মারধরের হুমকি দেন চাচা আনোয়ার। এতে রাজি না হলে চাচার নেতৃত্বে ভাই তানভীন আলম, বোন তানবিনা আক্তার লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন এক স্বজন।
হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়ে সোমবার দুপুরে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জেলার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগ দেন গৃহবূধ।
তার ভাই মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমার মায়ের দেয়া কথা অনুযায়ী, ছোট বোনকে পাভেলের কাছে বিয়ে দিছিলাম। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই পাভেল এবং তার পরিবারের লোকজন নানাভাবে আমার বোনকে নির্যাতন করেছেন। তারাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈশ্বরগঞ্জে নারী নির্যাতনের বিষয়টা আমাদের নজরে এসেছে। আমি ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতাকে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।’