বাগেরহাটের রামপালে ১০ বছর বয়সী এক ছাত্রকে হাত বেঁধে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারধরের মামলায় মাদ্রাসাশিক্ষক সৈয়দ মো. ওসমান গণিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে তাকে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম স্বপন কুমার সরকারের আদালতে নেয়া হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উপজেলার শ্রীফলতলা জে জি আর হাজি আরিফ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় রোববার রাতে ওই ঘটনা ঘটে। পরে শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন ছাত্রটির বাবা।
মামলায় বলা হয়, শনিবার রাতে ওই ছাত্র বাড়িতে এসে ভোরেই মাদ্রাসায় চলে যায়। মাদ্রাসায় যাওয়ার পরপরই কেন বলে যাওয়া হয়নি এই অভিযোগ তুলে মাদ্রাসার শিক্ষক সৈয়দ মো. ওসমান গণি বেত দিয়ে মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে হাত বেঁধে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে আবারও শারীরিক নির্যাতন চালান।
এ ঘটনার চার দিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি কওমি মাদ্রাসায় ৯ বছর বয়সী ছাত্রকে বেত্রাঘাতের ঘটনায় মায়ের করা মামলায় এক শিক্ষককে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সম্প্রতি বিভিন্ন মাদ্রাসায় ছাত্র নিপীড়নের অভিযোগ ওঠার মধ্যে প্রথম এমন রায় এসেছে।
ছাত্রটির বাবা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সন্তান বাড়িতে আসায় তাকে এভাবে মারধর করা হবে তা কোনোদিন ভাবিনি। আমার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমি এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সামসুদ্দিন জানান, উপজেলার শ্রীফলতলা জে জি আর হাজি আরিফ হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এর পরপরই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসায় ব্যাপকভাবে ছাত্র পেটানো ও বলাৎকারের অভিযোগ আছে। এসব ঘটনায় প্রায়ই শিক্ষার্থী মৃত্যুর খবরও আসে গণমাধ্যমে। যা নিয়ে সম্প্রতি ব্যাপক আলোচনাও হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, সাতকানিয়া ও রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিনটি ঘটনা সামনে এসেছে।
অভিভাবকদের মধ্যে ইদানীং এসব ঘটনা নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে। তারা প্রায়ই মামলা করছেন। যদিও বিচারে সাজার হার বেশ কম।