জামালপুরে নিজ ঘরে দগ্ধ হয়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন তার স্বামীও।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি করেছেন। এতে ঘটেছে হতাহতের ঘটনা। তবে ফায়ার সার্ভিস বলছে, যানজটের কারণে সামান্য দেরি হয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ লোকজন ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে ভাঙচুর চালান।
পৌর এলাকার রশিদপুরের একটি বাড়িতে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম শিপ্রা বেগম। তার স্বামী শুভ্র মিয়া রশিদপুর বাজারে একটি মুদি দোকানের মালিক।
বাড়ির মালিক লিপি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রশিদপুর এলাকার শুভ্র মিয়া পাঁচ মাস ধরে তার স্ত্রী ও চার বছরের মেয়েকে নিয়ে আমার বাড়িতে ভাড়া থাকে। আজ সকালে রান্না করছিল শিপ্রা। একটু পরে ঘরে ঢোকে শুভ্র।
‘হঠাৎ করে একটি বিকট শব্দ শুনে আমি ঘরের দরজা খুলেই দেখি পুরো ঘরে আগুন। পরে আমি চিৎকার করে লোকজনকে খবর দেই।’
লিপি আরও বলেন, ‘আগুন ছড়িয়ে পড়ায় শুভ্র ও শিপ্রা আটকে যায়। আগুনের তীব্রতার কারণে স্থানীয় লোকজন চেষ্টা করেও তাদের উদ্ধার করতে পারেননি। ঘটনাস্থলেই দগ্ধ শিপ্রার মৃত্যু হয়।
‘স্থানীয় লোকজন অনেক চেষ্টার পর অগ্নিদগ্ধ শুভ্রকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়ার ৪০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।
জেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার আফছার উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, গ্যাসের চুলার পাশেই পেট্রল ছিল। এই দাহ্য পদার্থ আগুনের সংস্পর্শে আসে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আরও জানান, শহরের যানজটের কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে তাদের সামান্য দেরি হয়। এখানে তাদের কোনো গাফিলতি ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
জামালপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান সোহান জানান, শুভ্র মিয়ার শরীরের একাংশ আগুনে পুড়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের সময় ওই দম্পতির মেয়ে বাড়িতে ছিল না। দুর্ঘটনার খবরে শুভ্রর বাবা বেলাল হোসেন স্ট্রোক করেছেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।