বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘আমি খালি আমার চোখ দুটা চাই’

  •    
  • ২১ মার্চ, ২০২১ ১০:৩৭

মাসকুরা খাতুন বলেন, ‘মহরমী বলে, মা তুমি আমার কাছে বসে থাকো। সারা দিন শুয়ে থাকতে থাকতে ওর ক্লান্তি চলে আসছে। তখন এক ঘর থেকে মাঝেমধ্যে অন্য ঘরে নিয়ে যাই।’

১১ বছরের মহরমীর এখন ছুটে বেড়ানোর কথা। উৎসুক দুচোখে খুঁজে বেড়ানোর কথা জানা-অজানাকে; দেখার কথা প্রিয়জনদের, খেলার কথা প্রাণভরে।

কিছুদিন আগেও তাই করত মহরমী আক্তার মায়া। বন্ধুদের নিয়ে খেলতে যেত আশপাশের পাড়া-মহল্লায়। এখন তার দিনরাত কাটে ঘরবন্দি হয়ে, বিছানায় পড়ে থেকে।

কারণ, প্রায় দুই মাস আগে খেলতে গিয়েই ককটেল বিস্ফোরণে এক হাতের কবজি আর দুই চোখ হারায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার গনকা বিদিরপুর মহল্লার এই শিশু।

এরপর থেকে মায়ের সহযোগিতা নিয়েই চলছে তার প্রতিদিনের সব কাজকর্ম।

মিরপুরের বাংলাদেশ আই হসপিটালে দুই দফা চিকিৎসা শেষে এখন বাড়িতেই থাকে মহরমী। তার চোখে আলো ফেরানোর ক্ষীণ আশা নিয়েই ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে দরিদ্র পরিবারটি।

মহরমীদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে শুয়ে আছে সে। পাশেই বসে আছেন তার মা মাসকুরা খাতুন।

মাসকুরা বলেন, ‘মহরমী বলে, মা তুমি আমার কাছে বসে থাকো। সারা দিন শুয়ে থাকতে থাকতে ওর ক্লান্তি চলে আসছে। তখন এক ঘর থেকে মাঝেমধ্যে অন্য ঘরে নিয়ে যাই।’

কান্নাভেজা কণ্ঠে মহরমী আকুতি জানায়, ‘আমি খালি আমার চোখ দুটা চাই, আর কিছু চাই না, খালি আমার চোখ দুটা দেন আপনারা।’

মহরমী স্থানীয় গনকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। গত ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মহল্লায় খেলার সময় খেলনা ভেবে সে কুড়িয়ে নিয়েছিল পরিত্যক্ত ককটেল। তখনই সেটি বিস্ফোরিত হয়। উড়ে যায় তার ডান হাতের কবজি।

মাসকুরা জানান, ককটেল বিস্ফোরণের পর মহরমীকে রাজশাহী মেডিক্যালে নেয়া হয়। সেখানে দেখা যায় চোখও মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এরপর রাজশাহী থেকে চোখের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়।

‘মিরপুরের বাংলাদেশ আই হসপিটালে প্রফেসর ডা. গোলাম রসুলের কাছে দেখাচ্ছি। দুইবার দেখানো হয়েছে। চোখের ড্রপসহ ওষুধ দিয়েছেন। আবার আগামী মাসে যাব।

‘আমি তো মা, শতকষ্ট হলেও মেয়ের চোখের চিকিৎসা করার চেষ্টা করছি। শেষ পর্যন্ত করে যাব। বাকিটুক আল্লার ইচ্ছা।’

মহরমীর দাদা আব্দুল কাইয়ুম জানান, তাদের ডাক্তার বলেছে দুইটা চোখের মধ্যে একটা চোখে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেই আশাতেই চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এই চিকিৎসায় ৩ লাখ টাকারও বেশি খরচ হবে বলে চিকিৎসক তাদের জানিয়েছেন। সে জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছে পরিবারটি।

দাদা খুব দুঃখ করে বলেন, ‘মহরমীর এক হাতের কবজি তো কেটেই ফেলছে, এহন যদি চোখটাও যায়, তাহলে মায়েডার জীবন কীভাবে বাঁচবে। আপনারা সবাই দুয়া করবেন যেন আমার মহরমী আবারও দেখতে পায়।’

এ বিভাগের আরো খবর