আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবলীগ সদস্য রোকন উদ্দিন রোকনকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনায় কাউন্সিলর সাইফুল বিন জলিলকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আদালতের মাধ্যমে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে সাইফুলকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন রোকন। এতে আসামি করা হয় অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই থেকে তিনজনকে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল হক জানান, সাইফুল ছাড়াও অন্য আসামিরা হচ্ছেন নগরীর মৌলভী পাড়ার কাউছার, গোয়ালপট্টির মো. সাক্কু, বজ্রপুরের লিটন মিয়া, গোয়ারপট্টির জসিম উদ্দিন, ডিগাম্বরীতলার মনিরুজ্জামান মনির, সদর দক্ষিন উপজেলার মোদপুর এলাকার অহিদুর রহমান ও জাকির হোসেন।
এ দিকে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সেখানে দেখা যাচ্ছে, রোকনকে গাড়ি চাপা দেয়ার পর কাউন্সিলর সাইফুল পুলিশের সামনেই আবার দা নিয়ে চড়াও হন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সাইফুলের ব্যাপক ধস্তাধস্তিও হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাউন্সিলর সাইফুল নগরীর চকবাজার বাসস্ট্যান্ড দখল নিয়ে আধিপাত্য বিস্তার করার জন্য প্রায়ই মহড়া দিতেন। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাইফুল আওয়ামী লীগের প্রার্থী রোকনকে পরাজিত করে কাউন্সিলর হন। এ নিয়েও আগে থেকেই তাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে।
তারা জানান, ৫ মার্চ কাউন্সিলর সাইফুল সংরক্ষিত আসনের মহিলা সাংসদ আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এর পর থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, ১২ মার্চ নগরীর কাসারিপট্টি মসজিদের ইমাম মাওলানা তাজুল ইসলামের উপর হামলা চালান কাউন্সিলর সাইফুল।
হামলার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে নগরীতে মানববন্ধন ও মিছিল সমাবেশ করেছেন আলেমরা।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোকনের বিষয়ে চিকিৎসকরা জানান, তার বাম পায়ের তিনটি অংশে ভেঙ্গেছে।
মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ শহিদ বলেন, ‘রোকন মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য। ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল একজন সন্ত্রাসী। মাদক কারবারি। কিছু দিন আগে সে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে।’
সম্প্রতি সুনামগঞ্জে সংখ্যালঘুদের হামলার ঘটনায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর কাঁসারিপট্টি মসজিদের সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে কান্দিরপাড় মহানগর আওয়ামী লীগের অফিসে দিকে যাচ্ছিলেন রোকন।
বেলা পৌনে ৪টার দিকে মিছিলটি নগরীর অজিতগুহ মহাবিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে গাড়ি নিয়ে মিছিলে হামলা চালান কাউন্সিলর সাইফুল। এ সময় তিনি নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
এরপর রোকনকে লক্ষ্য করে পিস্তল বের করে গুলি করতে উদ্যত হন। মিছিলে গাড়ি চাপায় আরও অন্তত চারজন আহত হয়।