একই জায়গায় একই দিনে ২৩ বছরের ব্যবধানে বাবার পর ছেলেকে খেল সুন্দরবনের বাঘ। ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের কাছিকাটা খালের পাশে। বাবা আতিয়ার গাজী গোলপাতা কাটতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারান। এবার ছেলে আবুল কালাম গাজী জীবিকা নির্বাহের তাগিদে গোলপাতা কাটতে গিয়ে প্রাণ দিলেন। পরিবার আতিয়ারের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ না পেলেও কালামের জন্য সরকারি অনুদান পাওয়ার আশা করছে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ছোট কুপট গ্রামের বাসিন্দা এবং নিহত কালাম গাজীর ভাই সালাম গাজী বলেন, ‘গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বন বিভাগতে পাস নে ভাই কালাম গাজী ও তার সঙ্গীরা সুন্দরবনে গেল গোলপাতা কাটতি। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) কাছিকাটার পায়রাটুনি খালের পাশে জঙ্গলে নেমে গোলপাতা কাটতিছিল তারা। হঠাৎ বাঘ হানা দে নে যায় কালাম গাজীরে। পরে আমরা বাঘের পিছু নি। বিকেলের মধ্যি লাঠিসোঁটা নে ঝাঁপায় পড়ি বাঘের মুখ থেকে কেড়ে আনি ভাইর লাশ।’
নিহত কালাম গাজীর ছেলে মহসীন আলম বলেন, ‘২৩ বছর আগে একই জাগায় একই দিনে আমার দাদা আতিয়ার গাজীকে বাঘে ধরিল। আমার আব্বা লোকজন নে দাদার লাশ ওইখানতে উদ্ধার করি আনে। ভাগ্যের কী খেলা, একই জায়গায় দাদা আর আব্বাকে হারাতি হলো।’
মহসীন আলম জানান, তার জানা মতে, দাদা মারা গেলে কোনো টাকা-পয়সা সরকারের কাছ থেকে তারা পায়নি। তবে বাবার মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ চান তিনি। তিনি বলেন, ‘শুনিচি বাঘে মারি ফেললি সরকার ১ লাখ টাকা দেয়। বন বিভাগের লোকেরা কয়িছে, কাগজপত্র জমা দিতি। আমরা তো মুরুক্ষ মানুষ। বুঝতি পারতিছিনে, কী-দি কী করিব।’
আটুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সালে বাবু বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ কালামের পরিবারকে কিছু সহযোগিতা করেছে। বাঘের হামলায় নিহত হলে সরকারি কিছু অনুদান পাওয়ার কথা। কিন্তু প্রক্রিয়াগত জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেকে তা পায় না।’
সুন্দরবন, সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনি ফরেস্ট স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বলেন, ‘বন বিভাগের আইন অনুযায়ী বৈধ পাসধারী বাঘের হামলায় নিহত হলে তার পরিবারকে ১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। তাদের পরিবারের লোকদের বুঝিয়ে বলেছি, কী কী কাগজ জমা দিতে হবে। আশা করি, কালাম গাজীর পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে।’