চুয়াডাঙ্গায় জেলা জজ আদালতে নতুন নাজির নিয়োগকে কেন্দ্র করে আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে আদালত কক্ষ।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১-এর আদালতে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
গত ১৫ মার্চ বিকেল পাঁচটায় অবসরজনিত ছুটিতে যান বিচারক রেজা মো. আলমগীর হাসান। তার সই করা এক আদেশ নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জেলা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী নুরুল হক নতুন নাজির হিসেবে যোগ দিতে যান।
কিন্তু কর্মচারীরা তাকে বাধা দেয়। এরপর তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বজলুর রহমানের কাছে নালিশ দিতে যান।
আদালতের বর্তমান নাজির মোহাম্মদ মাসুদুজ্জামান নিউজবাংলাকে জানান, ভারপ্রাপ্ত বিচারক আদেশটি মানতে না চাইলে নুরুল হকের লোকজন তার টেবিল ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় আদালতের কর্মচারীরা গেলে তাদের সঙ্গে নুরুলের সমর্থকদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম জানান, পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরিবেশ শান্ত রাখতে আদালতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নাজির মাসুদুজ্জামানের অভিযোগ করে বলেন, ‘বিচারক আলমগীর হাসান যোগ দেয়ার পর আমার কাছ থেকে ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে খরচ করেন। এর মধ্য আমার ব্যক্তিগত টাকাও রয়েছে। এখন টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বদলির হুমকি দেন। অবসরজনিত ছুটিতে যাওয়ার পর ওইদিন রাত একটার দিকে তিনি আমাকে পদ থেকে সরিয়ে নুরুল হককে নতুন নাজিরের দায়িত্ব দিয়ে একটি ভুয়া আদেশ জারি করেন।’
এই অভিযোগ অস্বীকার করে নুরুল হক বলেন, ‘আমার বদলির বিষয়ে আদেশ জারি হয় জেলা জজ অবসরে যাওয়ার আগে ওইদিন সকালে। আদেশের কপি মাসুদুজ্জামান সরিয়ে ফেলে। তবে আমার এবং জজের কাছে আদেশের কপি আছে।
‘আর মাসুদুজ্জামানকে দুর্নীতির দায়ে রেকর্ড শাখায় বদলি করা হয়েছে। এখন তিনি বিষয়টি অস্বীকার করছেন।’
নুরুল হকের সঙ্গে যাওয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেনের দাবি, ‘আদালতের কিছু ঘুষখোর কর্মচারী আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। নতুন নাজির নিয়োগের বিষয়ে আমরা ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজের কাছে গেলে তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের ৪-৫ জন আইনজীবী আহত হন।’
তিনি জানান, এই ঘটনার পর দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির এক জরুরি সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ বজলুর রহমান, নাজির মাসুদুজ্জামান ও বেঞ্চ সহকারী জহুরুল ইসলামের অপসারণের দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া তারা একটি মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন।