বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেতুর টাকা আত্মসাৎ: ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

  •    
  • ১৬ মার্চ, ২০২১ ১৬:০৭

বরগুনার আমতলীতে মামলায় কাগজে-কলমে দুটি সেতুর নির্মাণ দেখিয়ে ১ কোটি ৪৭ লাখ ১৯ হাজার ৯৫২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।  

বরগুনার আমতলীতে সেতু নির্মাণ না করেই ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান ও এলজিইডির তিন প্রকৌশলীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

বরগুনার বিশেষ জজ আদালতে সোমবার বিকেলে মামলার আবেদন করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মহসীন। বিচারক হাসানুল ইসলাম আবেদন গ্রহণ করে দুদকের বরগুনা ও পটুয়াখালী দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালককে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

একই সঙ্গে এ ঘটনায় কী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে তা আগামী ২৭ এপ্রিল আদালতকে অবগত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মামলায় কাগজে-কলমে দুটি সেতুর নির্মাণ দেখিয়ে ১ কোটি ৪৭ লাখ ১৯ হাজার ৯৫২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাদল খান, তার ছোট ভাই আলমাস খান, এলজিইডি বরগুনার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হুদা, এলজিইডি আমতলী উপজেলার সাবেক প্রকৌশলী মো. আতিয়ার রহমান, সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম এবং সাবেক হিসাবরক্ষক আনসার আলীকে অভিযুক্ত করা হয়।

এদের মধ্যে আতিয়ার রহমান বর্তমানে তহসিল অফিস নির্মাণ প্রকল্পে ঢাকায় চুক্তিভিত্তিক কর্মরত আছেন। আর সাইফুল ইসলাম কর্মরত আছেন বরগুনার বামনা উপজেলার প্রকৌশলী হিসেবে। এ ছাড়া হিসাবরক্ষক আনসার আলী কর্মরত আছেন এলজিইডির পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলায়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নে এলজিইডির অর্থায়নে ১ কোটি ৬ লাখ ১০ হাজার ২১০ টাকা ব্যয়ে ৯১ মিটার (২৯৮.৪৮ ফুট) দৈর্ঘ্যের একটি লোহার সেতু নির্মাণের কাজ পান বাদল খান। এ সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেখানো হয় ১ অক্টোবর ২০০৭ এবং কাজ সমাপ্তের তারিখ দেখানো হয় ১ অক্টোবর ২০০৮।

এ ছাড়া একই ইউনিয়নে এলজিইডির অর্থায়নে ৪১ লাখ ৯ হাজার ৭৪২ টাকা ব্যয়ে ২৫ মিটার (৮২ ফুট) দৈর্ঘ্যের একটি লোহার সেতু নির্মাণের কাজ পান বাদল খানের ভাই আলমাস খান। এরপর এ সেতুর নির্মাণের কার্যাদেশ দেখানো হয় ১ জানুয়ারি ২০০৯ এবং কাজ সমাপ্তের তারিখ দেখানো হয় ৩০ জুন ২০০৯।

কিন্তু প্রাক্কলনে দেখানো হলদিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চিলা গ্রামের আশ্বেদ মোল্লার বাড়ির সামনে গিয়ে কোনো সেতু দেখা যায়নি। যদিও প্রকৌশলীর প্রতিবেদনে ওই সেতুর কাজ শতভাগ হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে।

এ ছাড়াও রাওগাঁ আবাসনের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কেওড়াবুনিয়া খালের ওপর ‘নির্মিত’ ৪০ মিটার দীর্ঘ ওই সেতু নেই।

কোনো ধরনের কাজ না করেই তৎকালীন এলজিইডি বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হুদা, এলজিইডি আমতলী উপজেলার প্রকৌশলী আতিয়ার রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম এবং হিসাবরক্ষক আনসার আলীর সহায়তায় ‘জালিয়াতির মাধ্যমে’ প্রকল্পের পুরো টাকা তুলে নেন।

মামলা প্রসঙ্গে আইনজীবী মোহাম্মদ মহসীন বলেন, দুর্নীতিবাজরা দেশটাকে লোপাট করে চলছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ না করায় বারবার পার পেয়ে যায়। ঠিকাদারি কাজে অনিয়ম করে সেটা ভিন্ন একটি বিষয়। কিন্তু নির্মাণ না করেই দুটি সেতু গায়েব করে দেয়া, এটা সহ্য করার মতো নয়। তাই তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া দরকার।’

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, ‘অভিযোগের পক্ষে সব তথ্য উপাত্ত সংযোজন করে আমরা মামলাটি করেছি। এরপর মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত দুদকের বরগুনা ও পটুয়াখালীর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালককে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

মামলার অভিযোগের বিষয়ে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান ওরফে বাদল খান বলেন, ‘দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া আবাসন লাগোয়া বাঁশবুনিয়া খালের ওপর ৯১ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কাজ পেয়েছিলাম। অর্থসংকটের কারণে সেটি অন্য এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করেছি। সেখানে সেতু নির্মিত হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই।’

মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সঙ্গেও। কিন্তু তারা ফোন ধরেননি।

এ বিভাগের আরো খবর