দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট ও প্রচারে অংশ নেয়ার অভিযোগে বগুড়া আওয়ামী লীগের আট নেতাকে স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। গত ১ মার্চ বগুড়ার দলীয় কার্যালয় আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে আলোচনা হয়।
বগুড়ায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে ভোট ও প্রচারে অংশ নেয়ায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতার লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার ধুনট পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রচারে অংশ নেয়ায় গত ২ ফেব্রুয়ারি উপজেলা আওয়ামী লীগের চার নেতাকে দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারসহ স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশপত্র জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে পাঠানো হয়।
ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশকৃত নেতারা হলেন ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও স্থানীয় সাংসদের (আওয়ামী লীগ) ছেলে আসিফ ইকবাল সনি, মো. শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক মহসীন আলম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইমরুল কায়েস সেলিম। তৃতীয় দফায় নির্বাচনে গত ৩০ জানুয়ারি এই পৌরসভায় ভোটে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এজিএম বাদশাহ মেয়র হন।
আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌরসভা নির্বাচনে সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ভোট না করার অভিযোগে আওয়ামী লীগ থেকে নবনির্বাচিত কাউন্সিলর ও তার ছোট ভাইকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় স্থানীয়ভাবে। বহিষ্কৃতরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জার্জিস আলম রতন ও তার ছোট ভাই সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য খায়রুল আলম রবিন।
এ পৌরসভায় প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হয়। বগুড়ার সান্তাহারে জয় পায় বিএনপি। প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টো টানা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়ে হ্যাটট্রিক করেন।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী মতিউর রহমান মতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর শাহী সুমনকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়। গত ১৬ জানুয়ারি এই পৌরসভায় ভোট হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম দিয়ে। ভোটে বিজয়ী হন নৌকার মতি।
আর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বগুড়া পৌরসভায় মেয়র পদে জয় পান বিএনপির প্রার্থী রেজাউল করিম বাদশা। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন ওবায়দুল হাসান। তিনি তৃতীয় হন। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আব্দুল মান্নান আকন্দ। এ কারণে তাকেও বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু নিউজবাংলাকে বলেন, এই বহিষ্কারের বিষয়টি তো অনেক আগের। চিঠি পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রে। সম্প্রতি এক মিটিংয়ে দলীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই দিন বহিষ্কারের আলোচনা উঠেছিল।