সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কদমপাল গ্রামের ‘নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ’ এক কন্যাশিশুকে প্রায় চার ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার সকাল ৯টার দিকে ভাতিজি নিখোঁজের তথ্য জানিয়ে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করেন শিশুটির চাচা। এর চার ঘণ্টা পর শিশুটিকে তার নানার ভাইয়ের স্ত্রীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
সিরাজগঞ্জ সদর থানায় রোববার সন্ধ্যায় এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম।
তিনি জানান, কদমপাল গ্রামের সুলতান নামের একজনের আড়াই মাসের মেয়ে ছোয়ামনি চুরি হয়েছে- ফোনে এমন অভিযোগ পায় সদর থানা।
পুলিশ ওই বাড়িতে গেলে শিশুটির বাবা জানান, ভোর থেকে তার মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। তার স্ত্রীও এ বিষয়ে কিছু বলছেন না।
এক পর্যায়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটির মা নারগিস বেগমকে বলেন, ‘তিনি স্বপ্নে দেখেছেন, তার তৃতীয় কন্যা সন্তানকে (ছায়ামনি) যেন পরীর কাছে দিয়ে দেয়া হয়। রাতে পরী আসবে, এসে ছোয়ামনিকে নিয়ে যাবে। পরী নিয়ে গেলেই সংসারে শান্তি আসবে। তাই রাতে অজানা ব্যক্তির কাছে ছোয়ামনিকে দিয়ে দিই।’
নারগিসের বোন লিপি ও তার বাবা আবু বক্করকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানান, পরপর তিনটি কন্যাসন্তান হওয়ায় নারগিসকে দোষারোপ করতেন তার স্বামী সুলতান। এ নিয়ে তাকে গালিগালাজ ও কটাক্ষও করা হতো। সংসারে অশান্তির কারণে শনিবার নারগিস তার বাবাকে ফোন দিয়ে ছোয়ামনিকে নিয়ে যেতে বলেন।
তারা আরও জানান, রোববার ভোররাতে নারগিস তার বোন লিপির মাধ্যমে ছোয়ামনিকে বাবার বাড়ি রায়গঞ্জ উপজেলার কালিঞ্জা গ্রামে পাঠিয়ে দেন। পরে আবু বক্কর তার ভাইয়ের স্ত্রী হাসিনা বেগমের মাধ্যমে নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে শিশুটিকে পাঠিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেন।
এসপি জানান, ওই দুই জনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেলা ১টার দিকে কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট বাজার এলাকায় হাসিনার কাছে শিশুটিকে পায় পুলিশ। এ ঘটনায় ছোয়ামনির বাবা-মাসহ সাতজনকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ সদর সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আক্তার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহাউদ্দিন ফারুকী।