সিরাজগঞ্জে চুরির অভিযোগ পেয়ে নিখোঁজের তিন ঘণ্টা পর আড়াই মাসের শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের কদমপাল গ্রামে সকাল নয়টার দিকে বাড়ি থেকে মেয়ে ছোঁয়া মনি চুরি হয়েছে এমন অভিযোগ করেন শিশুটির বাবা।
এই অভিযোগে পাশের ভদ্রঘাট বাজার থেকে শিশুটিকে তার খালার কাছ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় খালাকে আটক করা হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহাউদ্দিন ফারুকী নিউজবাংলাকে জানান, তিন সন্তানকে নিয়ে তাদের মা নার্গিস বেগম রাতে ঘুমান। পাশের ঘরে ঘুমান তাদের বাবা সুলতান। সকালে ঘুম থেকে উঠে বোনকে দেখতে না পেয়ে বিষয়টি বাবাকে জানান সুলতানের বড় মেয়ে। তখন তিনি পুলিশকে খবর দেন।
তিনি আরও জানান, পরে শিশুটির মা দাবি করেন, পরপর তিনটি মেয়ে হওয়ায় পারিবারিক অশান্তি চলছিল। তিনি তার বোনকে শিশুটি দত্তক দেন। কিন্তু বিষয়টি তার স্বামী না জানায় পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ শিশুটির বাবা, মা, খালা ও নানাকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে।
এর আগে ৬ মার্চ জেলার কামারখন্দে নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় ২১ দিন বয়সী শিশু কাওসার হোসেন। নিখোঁজের চার ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে দুজনকে আটক করা হয়।
ফেব্রুয়ারি মাসে সিরাজগঞ্জে হাসপাতাল থেকে দুটি শিশু চুরির ঘটনা ঘটে।
২৭ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে সদ্যোজাত শিশু সামিউল চুরি হয়।
এই ঘটনার চার দিন আগে সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল থেকে ২৩ দিনের শিশু মাহিম চুরি হয়।
দ্বিতীয় ঘটনার দিন রাতেই জেলার আলোকদিয়া গ্রামের এক বাড়ি থেকে সামিউলকে জীবিত ও মাহিমকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় দুই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে।
আটক ছয়জন হলেন সলঙ্গা থানার সয়রন বিবি, তার মেয়ে আলপনা খাতুন, ছেলে রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী ময়না খাতুন এবং একই গ্রামের খাদিজা খাতুন ও মিনা খাতুন।
তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই দিনই সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
দুই শিশু চুরি হওয়ার ঘটনা নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) হাসিবুল আলম জানান, আটক আল্পনা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশু চুরির অভিযোগ স্বীকার করেছেন। প্রথমে চুরি করা এক শিশু মারা যাওয়ায় চার দিন পর হাসপাতাল থেকে আরেক শিশুকে চুরি করেন অভিযুক্তরা।
এসপি বলেন, ‘আল্পনা জানিয়েছেন, সন্তান না হওয়ায় স্বামী তাকে ছেড়ে আরেকজনকে বিয়ে করার হুমকি দেন। এরপর গর্ভধারণের মিথ্যা দাবি করে মাস কয়েক আগে মা সয়রন বিবির কাছে চলে আসেন তিনি।’
এরপর মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির পরিকল্পনা করেন।
১ মার্চ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের তত্ত্বাবধায়কের নিরাপত্তাকর্মী গোপাল চন্দ্র দাসকে আটক করে পুলিশ।