রংপুর সদর উপজেলার একটি রেলসেতুর নিচ থেকে দেনেশ চন্দ্র মান্না (৩০) নামের এক যুবকের পোড়া মরদেহ পাওয়া গেছে।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সিংগিমারী রেলসেতুর কাছে তার মরদেহ পাওয়া যায়। বেলা দেড়টার দিকে তাড়াহুড়া করে তার সৎকার করা হয়।
নিহত মান্নার বাড়ি উপজেলার সদ্যপুষ্কুরিনী ইউনিয়নের কিশামত মাধবপুর গ্রামে। তার পরিবারের দাবি, কিছুটা মানসিক সমস্যা থাকলেও তার আত্মহত্যা করার কথা নয়। কেরোসিন তেল দিয়ে আগুন ধরিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
মান্নার চাচাতো বোন পূর্নিমা রানী বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিংগিমারী পুলের নিচোত নাকি পুড়িয়ে আংরা (অঙ্গার) হয়ে আছিল ভাই। ওই পুলের পাশে আব্দুর রহমানের আম বাগান আছে। ওমার (তার) ছোট বেটা খবর দিয়ে কয় মান্নার মরি আছে, গাও (শরীর) পোড়া। এই কতা শুনিয়া সবাই দৌঁড়ি যায়, দেকি খালি মুক (মুখ) পোড়ে নাই, পুরে গাও পুড়ি গেইচে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা কেমন করি হয়? মানুষ যতই পাগলা হোক, নিজে কাইও (কখনও) মরবের চায় না। ওমরা (অন্যরা) তাড়াতাড়ি সৎকার করিল। একটা তদন্ত করা উচিত। হামরা গরীব মানুষ, সেজন্য কি তদন্ত হবান নয়?’
মান্নার স্ত্রী ফুলমতি জানান, তাদের সঙ্গে কারও কোনো ঝামেলা নেই। সকালে খাওয়ার পর কাজে যান মান্না। পরে শোনেন গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মারা গেছেন।
তিনি বলেন, ‘ওমার (মান্না) একনা মাতা (মাথা) খারাপ আছিল। কিন্তু আগুন নাগে দিয়ে মরবে, মুই (আমি) বিশ্বাস করোং না।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম সুমন নিউজবাংলাকে জানান, মান্না ব্রিজের পাশে গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে শুনেছেন। পাশের জমিতে যারা কাজ করছিলেন তারা তাকে জানিয়েছেন, তার ভাবছেন আবর্জনা জড়ো করে কেউ আগুন ধরায় দিছে। এজন্য কাছে যাননি। পরে শোনেন মান্নার মৃতদেহ পড়ে আছে।
সুমনের দাবি, মান্নার মানসিক সমস্যা ছিল। নিজেই শরীরে আগুন দিয়েছেন। গ্রামবাসী চাইছেন এজন্য পুলিশকে খবর না দিয়ে সৎকার করছেন।
পুলিশকে না জানানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই লোকের কিচ্ছু নাই, ওর ফির শত্রু থাকে...। পুলিশকে খবর দেয়া হয় নাই। জনগণ চাইচে ওই জন্য সৎকার করছি।’
রংপুর জেলা পুলিশের কোতয়ালী থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান জানান, এটা রেল ব্রীজের উপরের ঘটনা। বিষয়টি রেল পুলিশ দেখবে। তবে রংপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তফা জামান নিউজবাংলাকে বলেন, বিষয়টি তারা জানেন না।