বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে চাঁদপুর যাচ্ছিলেন রওশন আরা। সঙ্গী চার বছর বয়সী নাতি সাফিন। দাদির সঙ্গে ঘুরতে যাচ্ছে বলে সে খুশি। মা, বাবা আর ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দাদির হাত ধরে সাফিন। কিন্তু তখন কেউ কল্পনাই করেনি এটাই শেষ বিদায়।
কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুরে যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিকাণ্ডে যে দুজন পুড়ে মারা গেছে, তাদের একজন সাফিন।
চাঁদপুরগামী মতলব সার্ভিসের ওই বাসে তাদের আসন ছিল চালকের পাশে নারীদের জন্য সংরক্ষিত জায়গায়। বাস গৌরীপুর পৌঁছাতেই হঠাৎ বাসে আগুন ধরে যায়। দ্রুত নাতিকে টেনে বের করতে গিয়ে পা পিছলে বাসের দরজা দিয়ে পড়ে যান রওশন আরা। ভেতরেই থেকে যায় ছোট্ট সাফিন।
দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা বাসের ভেতর থেকে সাফিন এবং রফিকুল ইসলাম নামের ৭৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন রওশন আরাসহ ২১ যাত্রী।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রওশন আরা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চোখের সামনে নাতিডা পুইড়া গেল। আল্লায় আমারে নিয়া যাইত, আমার নাতিডারে বাঁচাইয়া রাইখা যাইত।’
এদিকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছেলের মরদেহ নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন সাইফুল ইসলাম।
বাবা সাইফুল ইসলাম ও ছোট ভাই ওমরের সঙ্গে সাফিন। ছবি: নিউজবাংলা
তিনি বলেন, ‘ভাই কী বলব? ছেলে আগুনে পুড়ে মারা গেছে। মা হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। ভাই আমার মতো হতভাগা আর কে আছে? আমার দুই ছেলের মধ্যে সাফিন বড়।
‘রাতে কাজ শেষ করে যখন বাসায় যাইতাম, আব্বু আব্বু কইয়া পোলাডা কাছে আইত। এখন কে আইব আমার কাছে?’