বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সুখ’ এনজিওর সুখ সইল না গ্রাহকদের কপালে

  •    
  • ৯ মার্চ, ২০২১ ২২:৩৪

স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার পাশাপাশি গ্রামের নারীদের হস্তশিল্প, কুটির শিল্প, সেলাই, বেতের কাজ, মৎস্য খামারসহ নানা ধরনের বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রলোভন দেখায়।

নওগাঁয় ঋণ দেয়ার নাম করে গ্রাহকের অন্তত সাড়ে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে একটি ভুয়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘স্বদেশ উন্নয়ন সংস্থা (সুখ)’।

২৩ ফেব্রুয়ারি নওগাঁ শহরের জগৎসিংহপুর মহল্লার বটতলা মোড় সংলগ্ন শামসুল হকের বাসায় ভাড়া নিয়ে অফিস স্থাপন করে সুখ। সংস্থার পরিচালক পরিচয় দেন খুলনা জেলার সাইফ হোসেন ও ম্যানেজার সিরাজগঞ্জ জেলার তাজবীর জুয়েল।

সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মঙ্গলপুর, রামজীবনপুর, আদমদুর্গাপুর, কাদোয়া, ফতেপুর, চন্ডিপুর ও নগরকুসুম্বিসহ কয়েকটি গ্রামে নারীদের জীবন মানোন্নয়ন ও ক্ষুদ্র ঋণদান কর্মসূচি চালুর উদ্যোগ নেয়। তারই অংশ হিসেবে গ্রামের নারীদের হস্তশিল্প, কুটির শিল্প, সেলাই, বেতের কাজ, মৎস্য খামারসহ নানা ধরনের বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রলোভন দেখায়।

তবে ৩ মার্চ ঋণ নিতে গেলে কার্যালয় তালাবদ্ধ পায়। পরে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে থানায় অভিযোগ করেন।

জেলা সমাজসেবা ও সমবায় অফিসে খোঁজ নিয়ে এ নামের কোনো সংস্থার রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুখের কর্মকর্তারা জানান ক্ষুদ্র ঋণদান হিসেবে ২ বছর মেয়াদী ১ লাখ টাকার বিপরীতে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় ও ১৫ হাজার টাকা সুদ নেয়া হবে।

সুখ এনজিওর প্রতারণার শিকার হয়েছেন কয়েকটি গ্রামের অন্তত ৪০ নারী। ছবি: নিউজবাংলা

ঋণ নেয়ার জন্য গ্রাহকের ৩ মার্চ অফিসে আসতে বলা হলেও গ্রাহকরা অফিস বন্ধ পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। তারপর থেকেই তালাবদ্ধ অফিস। সেই সঙ্গে বন্ধ তাদের মোবাইল।

মঙ্গলপুর গ্রামের ভুক্তভোগী আশিক হোসেন বলেন, ‘প্রতি কেন্দ্রে ৩০ জন নারীর জীবন মানোন্নয়ন ও ক্ষুদ্র ঋণদান দেয়া হবে। আমি ১ লাখ টাকা ঋণ নেব বলে স্ত্রীর মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা তাদের সঞ্চয় দিই। কিন্তু ৩ মার্চ অফিসে গিয়ে দেখি তালাবদ্ধ, তাদের ফোনও বন্ধ। আমরা বুঝতেই পারিনি এভাবে প্রতারণার কবলে পড়ব।’

আরেক ভুক্তভোগী জুয়েল হাসান ও গৃহবধু বিউটি বেগম জানান, কিছুদিন আগে ওই এনজিও থেকে দুইজন লোক গিয়ে তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার কথা জানান। তারাও তার আগে কিছু সঞ্চয় হিসেবে টাকা জমা দেন। তার চার দিন পরই বন্ধ পায় কার্যালয়।

রামজীবনপুর গ্রামের গৃহবধু পাখি, নুরুপ ও পাপিয়া জানান, তাদের সেলাইয়ের কাজ শেখাতে চেয়ে ফরম ৫০ টাকা ও সঞ্চয় বাবদ ২০০ টাকা নেয়। পরে জেনেছেন এনজিওটি উধাও।

সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের ইন্টিতলা মোড়ের বাসিন্দা শারমিন স্বদেশ উন্নয়ন সংস্থার অফিস সহায়ক পদে চাকরি করতেন। তিনিও প্রতারণার শিকার হয়েছেন দাবি করে বলেন, ‘৫০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে অফিস সহায়কের চাকরি নিয়েছি। ১০ দিন অফিস করেছি। ৩ মার্চ অফিসে গিয়ে দেখি বন্ধ। তারপর তাদেরকেও আর ফোনে পাইনি।’

বাসার মালিক শামসুল হক বলেন, ‘২৩ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ৭ হাজার টাকায় ভাড়া এবং ২ লাখ টাকা সিকিউরিটি হিসেবে বাসায় উঠে। অফিসে কাগজপত্রসহ চেয়ার টেবিল নিয়ে আসে। ৩ মার্চ সিকিউরিটি, বাসা ভাড়ার টাকা এবং ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারপর থেকে তাদের ফোন নম্বর বন্ধ, অফিসে কেউ আসছে না।’

নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘সোমবার ভুয়া এনজিওর বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর