নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার আট বছর উপলক্ষে তার কবরে ফুল দিয়ে স্মরণ ও তার রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে।
বন্দর উপজেলার মোল্লা বাড়ি এলাকায় সিরাজ শাহর আস্তানায় ত্বকীর কবরে ফুল দেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, ত্বকীর বাবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি এবং সাংস্কৃতিক জোটের কর্মীরা।
এরপর নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদ বলেন, ‘ত্বকী হত্যার সাথে আজমেরী ওসমান জড়িত। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার করেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব ৮ বছরেও অভিযোগপত্র দাখিল করেনি। আমরা অবিলম্বে আজমেরী ওসমানসহ সব আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।’
সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায় বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত ত্বকী হত্যার বিচার না হবে, ততদিন আমরা ঘরে ফিরে যাব না। আমরা ত্বকীর লাশ ছুঁয়ে এই শপথ করেছিলাম। আমরা সেই শপথে বলিয়ান আছি। ত্বকীকে হত্যার পর থেকে নারায়ণগঞ্জের সাস্কৃতিক জোটের কর্মী আন্দোলন সংগ্রাম করছে, বিচার না হওয়ায় পর্যন্ত তা চলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করব এ হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু করার নির্দেশ দিবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।’
ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন বলেন, ‘ত্বকী হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতি মাসে মোমবাতি জ্বালানো হয়। আট বছর ধরে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। ত্বকীর খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করব।’
২০১৩ সালের ৬ মার্চ বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় ত্বকী। ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনীর খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ ও র্যাব ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে ইউসুফ হোসের লিটন ও সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজমেরী ওসমান। অভিযোগ রয়েছে তার নেতৃত্বে নির্যাতন করে ত্বকীকে হত্যা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
ত্বকী হত্যার এক বছরের মাথায় ২০১৪ সালের ৫ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করেন তদন্তকারী সংস্থা র্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান। তিনি বলেছিলেন, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জন ত্বকী হত্যায় অংশ নেন। শিগগিরই এ বিষয়ে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হবে। তবে ৮ বছরেও অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেনি র্যাব।