সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজের চার ঘণ্টা পর ২১ দিন বয়সী শিশু কাওসার হোসেনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আক্তার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সিরাজগঞ্জ সদরের আভিসিনা হাসপাতালের সামনে থেকে শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কামারখন্দ উপজেলার বাড়াকান্দি গ্রামের রানী বেগম ও তার বাবা আনোয়ার হোসেনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া রানীর স্বামী শহিদুল ইসলাম সহ আরও তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) হাসিবুল আলম বিকেল সাড়ে ছয়টায় সংবাদ সম্মেলন করবেন।
এর আগে উপজেলার বাড়াকান্দি গ্রামে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে শিশু চুরির অভিযোগ করা হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, শিশু কাওসার হোসেনের বাবা শহিদুল ইসলাম দিনমজুর। তিনি সকালে কাজে বের হয়ে যান। ঘরের কাজ শেষ করে মা ফরিদা পারভীন কাওসারকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে বাড়ির পাশে শুকনো পাতা কুড়াতে যান। ঘরে ফিরে দেখেন কাওসার নেই।
শিশুটিকে নিয়ে কালো বোরকা পরা একজনকে কর্ণসুতি এলাকার দিকে যেতে দেখেছেন বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
ফেব্রুয়ারি মাসে সিরাজগঞ্জে হাসপাতাল থেকে দুটি শিশু চুরির ঘটনা ঘটে।
২৭ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে সদ্যজাত শিশু সামিউল চুরি হয়।
এই ঘটনার চার দিন আগে সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল থেকে ২৩ দিনের শিশু মাহিম চুরি হয়।
দ্বিতীয় ঘটনার দিন রাতেই জেলার আলোকদিয়া গ্রামের এক বাড়ি থেকে সামিউলকে জীবিত ও মাহিমকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় দুই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে।
আটক ছয়জন হলেন সলঙ্গা থানার সয়রন বিবি, তার মেয়ে আলপনা খাতুন, ছেলে রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী ময়না খাতুন এবং একই গ্রামের খাদিজা খাতুন ও মিনা খাতুন।
তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই দিনই সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
দুই শিশু চুরি হওয়ার ঘটনা নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) হাসিবুল আলম জানান, আটক আল্পনা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশু চুরির অভিযোগ স্বীকার করেছেন। প্রথমে চুরি করা এক শিশু মারা যাওয়ায় চার দিন পর হাসপাতাল থেকে আরেক শিশু চুরি করেন অভিযুক্তরা।
এসপি বলেন, ‘আল্পনা জানিয়েছেন, সন্তান না হওয়ায় স্বামী তাকে ছেড়ে আরেকজনকে বিয়ে করার হুমকি দেন। এর পর গর্ভধারণের মিথ্যা দাবি করে মাস কয়েক আগে মা সয়রন বিবির কাছে চলে আসেন তিনি।’
এরপর মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির পরিকল্পনা করেন।
১ মার্চ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের তত্ত্বাবধায়কের নিরাপত্তা কর্মী গোপাল চন্দ্র দাসকে আটক করে পুলিশ