দিনাজপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সমিতির সদস্য জাকিয়া তাবাসসুম জুঁই।
তিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য। দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি ভর্তি হন।
সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম সরকার ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় মামলা করেন সংঘর্ষে আহত আইনজীবী সারওয়ার আহমেদ বাবু। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাররফ হোসেন তথ্যটি নিশ্চিত করে জানান, পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দিনাজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সামনে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ হয়।
সে সময় জুঁইসহ অন্তত ১০ আইনজীবী আহত হন। এর মধ্যে সমিতির সদস্য সারওয়ার আহমেদ বাবু ও হাবিবুল্লাহকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) পারভেজ সোহেল রানা বলেন, ‘রাতে এমপি জুঁই জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হতে আসেন। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া তিনি বমি করেছেন। তাই আমরা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিচ্ছি। বর্তমানে তাকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে।’
রাতে তাকে হাসপাতালে দেখতে যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সংঘর্ষে জুঁই মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। সেই সময় তিনি বিষয়টি টের না পেলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাথায় তীব্র ব্যথা অনুভব করতে থাকেন। বমিও করেছেন, শ্বাসকষ্টের সমস্যাও হচ্ছে। তাই তিনি রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’
সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
যেভাবে সংঘর্ষ শুরু
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির সাধারণ সভা শুরু হয়। এই সময় সমিতির সাবেক কমিটির নেতারা সেখানে গিয়ে সভা নিয়ে আপত্তি করেন। এর পরপরই দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। কয়েক দফায় চলে এই সংঘর্ষ। বিকেলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জেলা জজ আদালতের বিশেষ পিপি শামসুর রহমান পারভেজ বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি বছর চৈত্র মাসের প্রথম শনিবার আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পয়লা বৈশাখ থেকে নতুন কমিটির কার্যক্রম শুরু হয়। তবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন হয়। তাই বর্তমান কমিটির মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর জন্য বৃহস্পতিবার জেলা আইনজীবী সমিতি সাধারণ সভা করে। কিন্তু সাবেক কমিটির নেতারা সাধারণ সভায় এসে বাধা দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন।’
জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান কমিটির নিজেদের মেয়াদ বাড়ানোর কোনো এখতিয়ার নেই। তাই এই অবৈধ সাধারণ সভা আমরা মানি না। আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে বর্তমান কমিটির সদস্যরা বহিরাগত বিএনপির ছেলেদের এনে আমাদের ওপর হামলা করে।’