সাতক্ষীরায় এক কলেজছাত্রীর ফেসবুক আইডি হ্যাক করে আপত্তিকর ছবি প্রকাশের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট।
ওই যুবকের নাম সৌরভ দাস গুপ্ত। বুধবার চট্টগ্রামের রাউজান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
সিআইডি জানিয়েছে, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের বাংলার অনার্সের ছাত্রী নন্দিনীর ফেসবুক আইডি হ্যাক করে নিজেই বিভিন্নজনের কাছে আপত্তিকর ছবি পাঠানোর পাশাপাশি বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন সৌরভ।
গত বছরের ৯ নভেম্বর রাতে সিলিংফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন নন্দিনী। তিনি সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুর এলাকার বিকাশ চৌধুরীর মেয়ে।
বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ জানান, নন্দিনীর মৃত্যুর খবর দেখে স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্তে নামেন তারা।
এই ঘটনাটির আদ্যোপান্ত খুঁজে বের করতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ, মোবাইল অপারেটর এবং ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
ফেসবুক আইডি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার জয় চক্রবর্তী নামের একজনের মোবাইলে সেটি ওপেন করা হয়েছে।
পরে সিআইডি সাইবার পুলিশের বিশেষ টিমের অভিযানে চট্টগ্রাম থেকে জয়কে আটক করা হয়। তিনি জানান, সৌরভ তার বন্ধু এবং গত নভেম্বরে তিনি তার বাসায় বেড়াতে আসেন। তখন জয়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সৌরভ তার ফেসবুক চালান।
জয়ের তথ্যে সাইবার টিম চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়তলী এলাকা থেকে সৌরভকে গ্রেপ্তার করে।
সৌরভ সিআইডিকে জানান, নন্দিনীর সঙ্গে তার পরিচয় ফেসবুকে। চ্যাটিংয়ের সূত্র ধরে ঘনিষ্ঠ হয় এবং একসময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এক বছরের মাথায় নন্দিনীর আচরণে পরিবর্তন খেয়াল করেন সৌরভ। তার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন নন্দিনী। সৌরভ মনে করেন নন্দিনী অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন।
এ সময় জেদের বসে নন্দিনীর ফেসবুক আইডি হ্যাক করেন সৌরভ। আর তার স্বজন এবং বন্ধুদের নানা আপত্তিকর ছবি পাঠান।
এসব কিছু সহ্য করতে না পেরে ৯ নভেম্বর রাতে আত্মহত্যা করেন নন্দিনী।
সিআইডির পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, ‘সাতক্ষীরায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় যে মামলা হয়েছিল সেই মামলাতেই সৌরভকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলায় ফেসবুক আইডি হ্যাক সংক্রান্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একাধিক ধারা যুক্ত হবে।’