পাবনায় স্ত্রীর করা যৌতুকের মামলায় পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানার দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে। পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এর বিচারক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. শামসুল আলামীন এই রায় ঘোষণা করেন।সাজাপ্রাপ্ত সোহেল রানার বাড়ি সাঁথিয়া উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সোহেল রানার স্ত্রী জালেকা খাতুন একই উপজেলার দারামুদা গ্রামের প্রয়াত আব্দুস সাত্তারের মেয়ে।এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সোহেল রানার সঙ্গে জালেকা খাতুনের বিয়ের পর এ দম্পতির সংসারে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন সোহেল রানা। যৌতুকের টাকা না পেয়ে বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে মারধর করতেন তিনি।
একপর্যায়ে যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ২০১৬ সালের ২৭ আগস্ট শিশু সন্তানসহ স্ত্রী জালেকা খাতুনকে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন সোহেল। এরপর স্ত্রী-সন্তানের কোনো খোঁজ নেননি। ওই বছরের ৭ অক্টোবর জালেকাকে নিয়ে তার স্বজনরা সোহেল রানার বাড়িতে গিয়ে তাকে মেনে নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু সোহেল ৫ লাখ টাকা না দিলে জালেকাকে গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়ে দেন।পরে ২০১৭ সালের ২৮ জানুয়ারি জালেকা পাবনা আমলি আদালত-৩-এ একটি পিটিশন মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সাঁথিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা পারভীনকে নির্দেশ দেন। তিনি ওই বছরের ১৪ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে একই বছরের ১২ এপ্রিল আসামি সোহেলের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। এরপর আদালত থেকে জামিন নেন সোহেল।দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ ও শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার সাজার ঘোষণা করে। এ সময় আসামি সোহেল রানা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগার পাঠানো হয়।
মামলা পরিচালনায় বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আব্দুর রউফ ও আসামিপক্ষে ছিলেন মো. আজিজুল হক।