গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাবেক ইউপি সদস্য লাল মিয়া সরকারের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।
সেই সঙ্গে রোববারের মধ্যে এই হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার না হলে পরদিন সোমবার অর্ধদিবস হরতালের ডাক দেয়া হয় বিক্ষোভ থেকে।
সোমবার দুপুরে ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী সদরের প্রধান প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে পরিষদ গেটে রাস্তায় বসে আধা ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা।
এ সময় সড়কের দুই পাশে শ শ যান চলাচল আটকা পড়ে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ বলেন, ‘দিনের আলোয় লাল মিয়াকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও ছুরি মেরে হত্যা করেছে খুনিরা। এই চিহ্নিত খুনিদের এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। পুলিশ-প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় খুনিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী রোববারের মধ্যে এই হত্যা মামলার চিহ্নিত মূল হোতাদের গ্রেপ্তার করা না হলে পরদিন সোমবার অর্ধদিবস হরতাল পালন করবে ফুলছড়িবাসী। সেদিন চলবে না কলকারখানা; চলবে না গাড়ির চাকা।’
এ সময় নিহত লাল মিয়ার বেয়াই ফজলুপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন সরকার বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে নিহত ব্যক্তির পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার করা না হলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুনিদের ধরে আনার হুমকি দেন তিনি।
বিক্ষোভ মিছিলে আরও বক্তব্য দেন ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রকি, বীর মুক্তিযোদ্ধা বেলাল হোসেন ইউসুফ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাসুদুর রহমান মাসুদ ও নিহত ব্যক্তির ছেলে মুরশিদ আলীসহ আরও অনেকে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে উপজেলা সদরে যাওয়ার পথে উড়িয়ার সাদেকখাঁ বাজার এলাকায় প্রতিপক্ষ এনায়েত হোসেন ও তার লোকজন লাল মিয়ার ওপর হামলা চালায়। তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় তারা। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে বিকেলে মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় পরদিন বুধবার ফুলছড়ি উপজেলা সদরে নিহত লাল মিয়ার লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। এদিন নিহত ব্যক্তির ছেলে মুরশিদ আলী সন্ধ্যায় একটি হত্যা মামলা করেন। কিন্তু মামলা হওয়ার তিন সপ্তাহ পার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।