সিরাজগঞ্জে হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ দুই শিশুকে পাওয়া গেছে জেলার আলোকদিয়া গ্রামের এক বাড়িতে। তবে শিশু দুটির একটি মারা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় শিশু চোর চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে, যাদের পাঁচজনই নারী।
সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে শনিবার চুরি হওয়া একদিন বয়সী সামিউলকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
আর চার দিন আগে সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশু মাহিনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ২৩ দিন।
সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী নিউজবাংলাকে জানান, আলোকদিয়ার একটি ঘর থেকে রাত পৌনে ১১টার দিকে সামিউল ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় শিশু চোর চক্রের পাঁচ নারী ও এক পুরুষ সদস্যকে আটক করা হয়।
আটক ছয়জন হলেন সলঙ্গা থানার সয়রন বিবি, তার মেয়ে আলপনা খাতুন, ছেলে রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী ময়না খাতুন এবং একই গ্রামের খাদিজা খাতুন ও মিনা খাতুন।
সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে শনিবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে শিশু সামিউলকে চুরি করা হয়।
শিশুটি তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রামের আব্দুল মাজেদ ও সবিতা খাতুন দম্পতির প্রথম ছেলে সন্তান। এক যুগ অপেক্ষার পর এই সন্তান আসে তাদের ঘরে।
এ ঘটনায় হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজের কয়েকটি ক্লিপ নিউজবাংলার হাতে আসে। প্রায় দেড় মিনিটের ফুটেজে দেখা যায়, শিশুটির নানীর সঙ্গে কথা বলছেন খয়েরি রংয়ের বোরকা পরা এক নারী। এক পর্যায়ে শিশুকে কোলে নেন তিনি। কয়েক ঘণ্টা তাকে কোলে নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় পায়চারী করেন। এর পর সুযোগ বুঝে কৌশলে নবজাতককে নিয়ে সটকে পড়েন।
মঙ্গলবার দুপুরে সিরাজগঞ্জে ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল থেকে শিশু মাহিনকে চুরি করা হয়।
সিরাজগঞ্জের আলোকদিয়া গ্রামের বাড়িতে এভাবেই পড়ে ছিল শিশু মাহিনের মৃতদেহ। ছবি: নিউজবাংলাহাসপাতালের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বোরকা পরা দুই নারী শিশুটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু হিজাবে মুখ ঢাকা থাকায় এবং সিসিটিভির ফুটেজ স্পষ্ট না হওয়ায় তাদের চেহারা বোঝা যাচ্ছে না।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা চয়ন ইসলাম পাঁচ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন। পরে সন্দেহভাজন এক জনকে আটক করে পুলিশ।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) হাসিবুল আলম জানান, শনিবার শিশু সামিউল চুরি হওয়ার পর তারা ওই হাসপাতাল ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন। ওইসব ভিডিও বিশ্লেষণ করে তারা আলোকদিয়ার শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পাশাপাশি ২৩ ফেব্রুয়ারি চুরি যাওয়া শিশুটির মৃতদেহও সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, আটকদের শনিবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।