সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে এবার নবজাতক চুরির অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার বিকেলে সোয়া চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেন সালঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জিলানী।
শিশুটি তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রামের আব্দুল মাজেদ ও সবিতা খাতুন দম্পতির প্রথম ছেলে সন্তান।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন ও বাবা আব্দুল মাজেদ নিউজবাংলাকে জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন সবিতা। বেলা ১১টার দিকে সিজারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান জন্ম দেন তিনি।
প্রসূতি বেশ কিছুক্ষণ অচেতন থাকায় শিশুটিকে নানী জয়নব কোলে নেন। এ সময় নবজাতকের কান্না শুনে বোরখা পরা এক নারী জয়নবের সঙ্গে ভাব জমায়। কয়েক ঘণ্টা শিশুটিকে কোলে রাখেন ওই নারী। এক পর্যায়ে জয়নব ওষুধ আনতে গেলে ওই নারী শিশুকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
ওসি জিলানী বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’
সিসিটিভিতে দেখা যায় এই নারী শিশুকে নিয়ে সটকে পড়ছেন। ছবি: নিউজবাংলা
নবজাতককে দেখতে না পেয়ে হাসপাতালের বিছানায় অসুস্থ মা সবিতা পাগলপ্রায়। যে ভাবেই হোক ছেলেকে উদ্ধার করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এর চার দিন আগে সিরাজগঞ্জে ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল থেকে ২৩ দিনের শিশু মাহিম চুরি হয়। ওই শিশুকে শনিবার সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
শনিবার বিকেল চারটার দিকে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। চারটি টিম মাঠে রয়েছে। শিশুটির সন্ধানে প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া হচ্ছে। কাজ করছেন র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরাও।’
সন্তান নিখোঁজের পর শিশুর মা মঞ্জুয়ারা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঠান্ডাজনিত কারণে ছয় দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হই। আজকে কাপড় ধোয়ার জন্য বাইরে যাই। পরে এসে দেখি আমার ছেলে মাহিম নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পাওয়া যায়নি।’
হাসপাতালের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বোরকা পরা দুই নারী শিশুটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু হিজাবে মুখ ঢাকা থাকায় এবং সিসিটিভির ফুটেজ স্পষ্ট না হওয়ায় তাদের চেহারা বোঝা যাচ্ছে না।
ঘটনার দিন রাতেই শিশুটির বাবা চয়ন ইসলাম পাঁচ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন।
ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে এই কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।