মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় শুক্রবার ছুটির দিনে অন্তত ২০ জনের প্রাণহানির পর আজ বিভিন্ন স্থানে নিহত হয়েছেন অন্তত পাঁচ জন। এর মধ্যে কক্সবাজারেই সড়কে ঝরেছে দুই জনের প্রাণ। কুড়িগ্রামে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়েছে এক শিশু। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বরিশাল
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বাসচাপায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
বরিশাল ক্যাডেট কলেজের সামনে শনিবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মোবারক হোসেন হাওলাদার বাবুগঞ্জ উপজেলার পাংশা এলাকার বাসিন্দা। তিনি জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) অবসরপ্রাপ্ত ফিল্ড অফিসার ছিলেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ বিন আলম নিউজবাংলাকে জানান, বরিশাল থেকে ঢাকাগামী সাকুরা পরিবহনের একটি বাস মোবারকের মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে চাপা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। দুর্ঘটনার পর বাস নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন চালক ও হেলপার। তবে রহমতপুর ব্রিজ এলাকায় স্থানীয়দের বাধার মুখে গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান তারা।
ওসি আরও জানান, ওই বাস ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
কক্সবাজার
কক্সবাজারের-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে চালকসহ দুই জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
চকরিয়া উপজেলার ইসলামনগর এলাকায় শনিবার সকালে সাড়ে নয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মাইক্রোবাসচালক এনামুল হক ও পেকুয়ার শিলকালি এলাকার আবু তালেব।
আহত ব্যক্তিদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, চিরিংগা থেকে যাত্রীবাহী একটি মাইক্রোবাস চট্টগ্রাম যাচ্ছিল। ইসলামনগর এলাকায় এনা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে গাড়িটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হন চালক এনামুল হক।
আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার সময় মারা যান যাত্রী আবু তালেব। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পাঠানো হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
এসআই সিরাজুল আরও জানান, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়েছে। তবে বাসচালক ও হেলপারকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনা মামলা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নীলফামারী
নীলফামারী সদরে অটোবাইকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১১ জন।
সৈয়দপুর সড়কের কামারপাড়া এলাকায় শনিবার সকাল ৭টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মশিউর রহমান সদরের কানিয়ালখাত গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সনিক কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।
সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার অমল রায় বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে হাসপাতালে আনার পথে একজন মারা গেছেন। গুরুতর আহত তিনজনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি আটজনকে এখানেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নীলফামারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পরিতোষ চন্দ্র রায় জানান, সকালে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) শ্রমিক নিয়ে অটোবাইকটি কামারপাড়া এলাকায় পৌঁছালে ঢাকা থেকে আসা নীলফামারীগামী জিসা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
দুর্ঘটনার পর চালক বাসটি নিয়ে পালিয়ে যান বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে সাত বছরের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে কেসি রোড় রামদাস ধনিরাম যুগীপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত শিশু তবকপুর মণ্ডলপাড়া গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, মা ও বোনের সঙ্গে রাস্তা পারাপারের সময় শিশুটিকে চাপায় দেয় ঘাতক ট্রাক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।
এ ঘটনায় ট্রাকচালক রোকন আলীকে আটক করা হয়েছে।