বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্যপ্রাণীর পানির চাহিদা মেটাবে ৮৮টি পুকুর

  •    
  • ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০৮:০৯

বনবিভাগ জানিয়েছে, জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ৮৮টি পুকুর খনন ও পুনঃখননে ব্যয় হচ্ছে ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মায়াবি হরিণসহ বন্য প্রাণীর আধিক্য রয়েছে এমন এলাকায় পুকুর খনন ও পুনঃখননের কাজ জুন মাসের মধ্যে শেষ হবে।

সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীদের সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে খনন করা হচ্ছে ৮৮টি পুকুর। এতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মায়াবি হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির প্রাণীর মিঠাপানির চাহিদা মেটাবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।

একই সঙ্গে এসব পুকুর সুন্দরবনে থাকা বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বনজীবী ও পর্যটকদেরও পানির চাহিদা মেটাবে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে পুকুর খনন ও পুনঃখননে ব্যয় হচ্ছে ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মায়াবি হরিণসহ বন্যপ্রাণীর আধিক্য রয়েছে এমন এলাকায় পুকুর খনন ও পুনঃখননের কাজ জুন মাসের মধ্যে শেষ হবে।

১৯ ফেব্রুয়ারি পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরে আনুষ্ঠানিকভাবে পুকুর খনন ও পুনঃখননকাজের উদ্বোধন করেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার তালুকদার।

বন বিভাগ জানিয়েছে, খননের পাশাপাশি পাকা ঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে আরও ৭০টি পুকুরে।

বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপমন্ত্রী ও বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহার তালুকদার জানান, সুন্দরবনের মধ্যে থাকা পুকুরগুলো ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ভরাট হয়ে যাওয়ায় বছরের পর বছর বাঘ-হরিণসহ বন্য প্রাণীগুলো সুপেয় পানির সংকটে ছিল। এ কারণেই এসব পুকুর খনন করা হচ্ছে।

বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবনের নতুন করে পুকুর খনন ও পুনঃখনন করার তালিকায় রয়েছে ৫৩টি। এর মধ্যে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে শরণখোলা রেঞ্জে তিনটি পুকুর খনন করা হচ্ছে আর পুনঃখনন করা হচ্ছে ৫০টি পুকুর।

তিনি জানান, এই রেঞ্জের ২৪টি পুকুর পুনঃখননের মধ্যে কচিখালী অভয়ারণ্যে চারটি, কটকা অভয়ারণ্যে চারটি, দুবলায় এলাকায় তিনটি, শরণখোলা রেঞ্জ সদরে দুটি, দাশের ভারানীতে দুটি। এ ছাড়া একটি করে পুকুর পুনঃখনন করা হচ্ছে ডুমুরিয়া, চরখালী, তেরাবেকা, চান্দেশর, শাপলা, ভোলা, শেলারচর, কোকিলমুনি ও সুপতিতে।

বন্যপ্রাণীদের জন্য খনন করা হচ্ছে পুকুর। ছবি: নিউজবাংলা

মুহম্মদ বেলায়েত হোসেন আরও বলেন, চাঁপাই রেঞ্জে পুনঃখনন করা ২৬টি পুকুরের মধ্যে রয়েছে ধানসাগরে তিনটি, গুলিশাখালীতে দুটি, আমুরবুনিয়ায় দুটি। একটি করে পুকুর পুনঃখনন করা হচ্ছে চাঁদপাই, ঢাংমারী, লাউডোপ, জোংড়া, ঘাগড়ামারী, নাংলী, হরিণটানা, কলমতেজী, তাম্বুলবুনিয়া, জিউধরা, বরইতলা, কাটাখালী, শুয়ারমারা, মরাপশুর, বৈদ্যমারী, আন্ধারমানিক, হারবাড়িয়া, নন্দবালা ও চরাপুটিয়ায়।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। যা দেশের সংরক্ষিত বনভূমির ৫১ ভাগ। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টায় ছয়বার রূপ বদলায় এই ম্যানগ্রোভ বনভূমি। দিনে দুইবার সমুদ্রের জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়া লবণাক্ত স্থলভাগের পরিমাণ ৪ হাজার ১৪২ দশমিক ৬ বর্গকিলোমিটার। সংরক্ষিত এই বনের তিনটি এলাকাকে ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ইউনেসকো ৭৯৮তম ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইট ঘোষণা করে। এই তিনটি এলাকা পুরো সুন্দরবনের শতকরা ৩০ ভাগ।

সুন্দরবনে সুন্দরী, গেওয়া, গরান, পশুরসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছ রয়েছে।

এ ছাড়া ৩৭৫ প্রজাতির বন্য প্রাণীর মধ্যে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণসহ ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী। রয়েছে কুমির, গুইসাপ, কচ্ছপ, ডলফিন, অজগর, কিংকোবরাসহ ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৩১৫ প্রজাতির পাখি।

এরই মধ্যে সুন্দরবন থেকে হারিয়ে গেছে এক প্রজাতির বন্য মহিষ, দুই প্রজাতির হরিণ, দুই প্রজাতির গন্ডার, এক প্রজাতির মিঠাপানির কুমির।

সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইটের পাশাপাশি বিশ্বের বৃহৎ জলাভূমিও। সুন্দরবনের জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ।

১৯৯২ সালে সমগ্র সুন্দরবনের এই জলভাগকে রামসার এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া সুন্দরবনের সমুদ্র এলাকার পরিমাণ ১ হাজার ৬০৩ দশমিক ২ বর্গকিলোমিটার। সুন্দরবনের এই জলভাগে ছোট-বড় ৪৫০টি নদী ও খাল রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর